হালদায় ‌হ্যাটট্রিক, সক্রিয় অসাধু চক্র

আবারো হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ। শনিবার (১৯ জুন) থেকে রোববার (২০ জুন) বিকাল পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ৯০ কেজি নমুনা ডিম।

‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ খ্যাত দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ‘হ্যাটট্রিক’ ডিম ছেড়েছে মা মাছ। এর আগে ২৬ মে নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। কিন্তু সেবার ঘূর্ণিঝড় ‘আয়াস’ কেড়ে নেয় ডিম সংগ্রহকারীদের হাসি। পানিতে লবণের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেবার প্রচুর ডিম নষ্ট হয়।

তবে ২ জুন প্রকৃতির আশীর্বাদে আশানুরূপ ডিম ছাড়ে মা মাছ। ডিম সংগ্রহকারীরাও উৎসবের আমেজে বালতিভর্তি ডিম সংগ্রহ করে।

সর্বশেষ ১৯ জুন রাতে তৃতীয়বারের মতো ডিম ছাড়ে মা মাছ। মূলত গত দু’দিনের বর্ষণে পাহাড়ি ঢল থাকায় মা মাছ ডিম ছেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে এই নমুনা ডিম ছাড়াকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তৎপর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। অল্প পরিমাণ নমুনা ডিম ছাড়লেও একটি চক্র পুরোদমে ডিম ছাড়ার গুজব ছড়াচ্ছেন। এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।

জানা গেছে, শনিবার বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হালদা নদীর হাটহাজারী অংশের আজিমের ঘাট থেকে পুরা আউলিয়া (প্রকাশ পুরুলিয়া) স্লুইস গেট পর্যন্ত এলাকায় ২৫-৩০টি নৌকায় অর্ধশতাধিক ডিম সংগ্রহকারী নৌকা, জাল ও বালতি নিয়ে মা মাছের নিষিক্ত নমুনা ডিম সংগ্রহ করে। এ সময় প্রতি নৌকায় গড়ে ১০০-১৫০ গ্রাম পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করার কথা জানিয়েছেন একাধিক আহরণকারী। তবে সংশ্লিষ্ট মৎস্য বিভাগ সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ ৯০ কেজি বলে দাবি করেছে। হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ভাড়া করে একটি নৌকা নিয়ে নদীতে ডিম সংগ্রহ করতে এসেছি। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো ডিম সংগ্রহ করতে পারিনি।

এক কেজি থেকে এক বালতি পর্যন্ত ডিম আহরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব ভিত্তিহীন খবর। নমুনা ডিম ছাড়াকে কেন্দ্র করে একটি অসাধু চক্র এবারও বেশ সক্রিয়। তবে কয়েকটি নৌকায় দেড়শ’ থেকে দুইশ’ গ্রাম পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

তবে কৃত্রিম রেণু উৎপাদনকারী অসাধু চক্রের কোনো ধরনের হেরফের করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাটহাজারী উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা রনি।

এদিকে ৯০ কেজি ডিম সংগ্রহ হয়েছে দাবি করে চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, পাহাড়ি ঢলের কারণে আবারো মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। প্রায় ৯০ কেজি নিষিক্ত ডিম আনা হয়েছে হাটহাজারী অংশের তিনটি হ্যাচারিতে।

যোগাযোগ করা হলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, হালদা থেকে ডিম সংগ্রহকারীরা আজ অল্প কিছু ডিম আহরণ করেছেন। এগুলো নমুনা ডিম নাকি অন্য কিছু এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ভালো বলতে পারবেন। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ। ২৬ মে রাতে প্রথম নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। এরপর দ্বিতীয় দফায় ডিম ছাড়ে ২ জুন বিকালে। সর্বশেষ ১৯ জুন বিকাল ৫টা থেকে আবারো ডিম সংগ্রহ শুরু করে ডিম সংগ্রহকারীরা।

ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!