চট্টগ্রামের ৮৫ স্পটে ‘করোনার ছোবলে’ যত মৃত্যু—আক্রান্ত

চট্টগ্রামের ৮৫ স্পটে ছোবল মেরেছে ‘করোনা’। নগর-গ্রামের এ ৮৫ স্পটেই করোনার যত মৃত্যু, যত আক্রান্ত।

৮৫ স্পটের মধ্যে নগরেই রয়েছে ৭১ স্পট। যার মধ্যে ৫০টির নাম উল্লেখ করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। বাকি ২১টি স্পট রাখা হয়েছে ‘অন্যান্য’ হিসেবে। এছাড়া নগরের বাইরে রয়েছে ’১৪ স্পট’। চট্টগ্রামের এ ১৪ উপজেলায় শনাক্তের পাশাপাশি রয়েছে মৃত্যুও।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাতে চট্টগ্রামে ১ লাখ ৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১ হাজার ২৪৬ জন। আক্রান্ত ও মৃত্যু— দুটোতেই উপজেলার চেয়ে বেশি নগরে।

করোনা শনাক্ত ১ লাখ ৪৫ জনের মধ্যে ৭২ হাজার ৬৫২ জন নগরের এবং ২৭ হাজার ৩৯৩ জন উপজেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে পুরুষ ৬১ হাজার ৮৮৩ জন এবং মহিলা ৩৮ হাজার ১৬২ জন।

করোনায় মৃত্যু হওয়া ১ হাজার ২৪৬ জনের মধ্যে ৬৯৫ জন নগরের এবং ৫৫১ জন উপজেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে পুরুষ ৭৪৮ জন ও মহিলা ৪৯৮ জন।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে করোনা : শনাক্তে ‘স্বপ্ন’, চোখ রাঙাচ্ছে ‘মৃত্যু’

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নগরভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় করোনা আক্রান্ত ৬৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নগরের তিনটি এলাকায় মৃত্যু সবচেয়ে বেশি। এলাকাগুলো হলো— হালিশহরে ৯১ জন, কোতোয়ালীতে ৫৯ জন এবং চান্দগাঁওয়ে ৫৭ জন।

এছাড়া চকবাজারে ৩৭ জন, খুলশিতে ২৯ জন, বন্দরে ৪৯ জন, ডবলমুরিংয়ে ২৬ জন, বাকলিয়ায় ১৪ জন, বায়েজিদে ২৫ জন, আকবরশাহে ২৩ জন, পতেঙ্গায় ২৪ জন, সুগন্ধায় ২ জন, মোহরায় ৩ জন, লালখানবাজারে ৪ জন, মাদারবাড়িতে ৬ জন, কদমতলীতে ১ জন, আগ্রাবাদে ২৬ জন, পাঁচলাইশে ৪৫ জন, পাহাড়তলীতে ৩০ জন, ইপিজেডে ৫ জন, সদরঘাটে ১১ জন, এনায়েতবাজারে ৩ জন, দামপাড়ায় ২০ জন, ঈদগায় ৪ জন, বউবাজারে ১ জন, মোগলটুলীতে ১ জন, মুরাদপুরে ১ জন, লেভেলপার্কে ১ জন, রাহাত্তারপুলে ৪ জন, ফিরোজশাহ কলোনিতে ৫ জন, আসকারদীঘির পাড়ে ৪ জন, কর্ণফুলীতে ১৪ জন, হাজারী লেইনে ৩ জন, কাজির দেউড়িতে ৪ জন, নাসিরাবাদ হাউজিংয়ে ৮ জন, কাট্টলীতে ৫ জন, দু’নম্বর গেটে ৩ জন, বিশ্বকলোনিতে  ১ জন, দেওয়ানবাজারে ৪ জন, বড় পোলে ১ জন, মনসুরাবাদে ২ জন, রেয়াজউদ্দীন বাজারে ২ জন, হিলভিউতে ২ জন, চন্দনপুরায় ১ জন, দেওয়ানহাটে ২ জন, ব্যাটারী গলিতে ১ জন, কালুরঘাটে ২ জন, কাতালগঞ্জে ২ জন, আনন্দপুরে ১ জন, মোহাম্মদপুরে ২ জন এবং অন্যান্য ২১ জন।

উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৪ উপজেলায় এ পর্যন্ত ২৭ হাজার ৩৯৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শনাক্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষ অবস্থান করছে হাটহাজারী উপজেলা। এর পরের অবস্থানে রয়েছে রাউজান ও সীতাকুণ্ড।

সাতকানিয়ায় ১ হাজার ২৯ জন, সীতাকুণ্ডে ২ হাজার ৪৬২ জন, বোয়াখালীতে ২ হাজার ২৭ জন, পটিয়ায় ১ হাজার ৮৮৫ জন, আনোয়ারায় ১ হাজার ৩২২ জন, চন্দনাইশে ১ হাজার ৫ জন, ফটিকছড়িতে ২ হাজার ৭৪৩ জন, মিরসরাইয়ে ১ হাজার ৪৯৮ জন, হাটহাজারীতে ৫ হাজার ৩২৪ জন, লোহাগাড়া ৭৯৮ জন, সন্দ্বীপে ৬৭৩ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ১ হাজার ৭৮৬ জন, বাঁশখালীতে ১ হাজার ১৩৪ জন এবং রাউজানে ৩ হাজার ৬৫৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এদিকে ১৪ উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৫৫১ জন। এর মধ্যে সাতকানিয়ায় ৩৫ জন, সীতাকুণ্ডে ৫৩ জন, বোয়াখালীতে ৪২ জন, পটিয়ায় ৪৫ জন, আনোয়ারায় ১৯ জন, চন্দনাইশে ১৭ জন, ফটিকছড়িতে ৩৯ জন, মিরসরাইয়ে ৪৪ জন, হাটহাজারীতে ১০৮ জন, লোহাগাড়ায় ২৪ জন, সন্দ্বীপে ১৫ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৩৪ জন, বাঁশখালীতে ১৮ জন এবং রাউজানে ১৮ জন।

বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ০-১০ বছর বয়সী আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৬৫৪ জন, শনাক্তের হার ২.৬৫ শতাংশ। ১১-২০ বছর বয়সী ৭ হাজার ৭৭৩ জন, শনাক্তের হার ৭.৭৬ শতাংশ। ২১-৩০ বয়সী ২০ হাজার ৫৩১ জন, শনাক্তের হার ২০.৫২ শতাংশ। ৩১-৪০ বছর বয়সী ২২ হাজার ৯৭৩ জন, শনাক্তের হার ২২.৯৬ শতাংশ। ৪১-৫০ বছর বয়সী ১৭ হাজার ৮৫ জন, শনাক্তের হার ১৭.০৭ শতাংশ। ৫১-৬০ বছর বয়সী ১৪ হাজার ৬৮০ জন, শনাক্তের হার ১৪.৬৭ শতাংশ। ৬১ বছরের ঊর্ধ্বে ১৪ হাজার ৩৪৯ জন, শনাক্তের হার ১৪.৩৪ শতাংশ।

করোনায় ৬১ বছরের বেশি বয়সীদের সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত এ বয়সের ৭০৭ জন মারা গেছেন। শতকরা হার ৫৬.৭৪ শতাংশ।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে করোনা : শনিতেও শুক্রের ‘সুখবর’

এছাড়া ৫১-৬০ বয়সীদের মৃত্যুর সংখ্যা ২৮৫। ৪১-৫৫ বছরের ১৫৫ জন, ৩১-৪০ বছরের ৬০ জন, ২১-৩০ বছরের ২৫ জন, ১১-২০ বছরের ৯ জন এবং ০-১০ বছরের ৫ জন।

অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১ হাজার ২৫২ নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৫ করোনা রোগী।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ২৫২ নমুনা পরীক্ষায় ৭৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৫০ জন নগরের এবং ২৬ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এদিন চট্টগ্রামে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ ১০টি ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!