৩ চোরই জাহাজের তেল নিয়ন্ত্রক, নৌ পুলিশের ‘চোখ রাঙানিতেও’ থামেনি তেল চুরি

নৌ পুলিশের অভিযানের পরও থামেনি বিদেশ থেকে আনা অপরিশোধিত ভোজ্যতেল চুরি। গ্রেপ্তার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে ফের সক্রিয়। ওই চোরচক্র এখনো রয়েছে তানিশা এন্টারপ্রাইজ লাইটারেজ জাহাজের মালিক হারুন উর রশিদ, আশিক কামাল ও জাহিদ হাসানের নিয়ন্ত্রণে।

জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে তানিশা এন্টারপ্রাইজ নামের লাইটারেজ থেকে পাইপ দিয়ে ভাউজারে তেল চুরি চলছিল। এ সময় চোরচক্রকে হাতেনাতে আটক করে নৌ পুলিশ। এ ঘটনায় পাঁচ তেল চোর শ্রমিকের সঙ্গে আটক করা হয় লাইটারেজ জাহাজের সাত কর্মীকেও।

পুলিশ বলছে, তানিশা এন্টারপ্রাইজ লাইটারেজ জাহাজের মালিক হারুন উর রশিদ, আশিক কামাল ও জাহিদ হাসান চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত। শবনম-৪ নামে একটি অয়েল ট্যাংকার থেকে এ লাইটারেজ জাহাজে তেল নেওয়া হয়েছিল। এরপর তা ভাউজারে নেওয়া হচ্ছিল। অভিযানে লাইটারেজ জাহাজসহ আরও দুটি তেলের ভাউজার জব্দ করে নৌ পুলিশ।

আরও পড়ুন: আগুন জ্বলছে—ধোঁয়াও, বিএম কনটেইনার ডিপোতে ফের বিস্ফোরণের শঙ্কা

এ ঘটনায় আটক ১২ জনসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় মামলা করে পুলিশ। মামলায় আসামি করা হয় লাইটারেজ জাহাজ তানিশা এন্টারপ্রাইজের মালিক হারুনর উর রশিদকেও। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে পালানো লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক জসীম উদ্দিনকেও আসামি করা হয়েছে বলে জানায় নৌ পুলিশ।

কিন্তু তানিশা এন্টারপ্রাইজের মালিক হারুন উর রশিদ, আশিক কামাল, জাহিদ হাসান ও জসীম উদ্দীন ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। তাঁরা এখনও তেল চোরাকারবারি করছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ওসি এবিএম মিজানুর রহমান।

তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মূলত জাহাজের ক্রুদের ম্যানেজ করেই চলে তেল চুরি। আর চুরি যাওয়া এই তেল দেখানো হয় সিস্টেম লস হিসেবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ভোজ্যতেলের বাজারে। চুরি যাওয়া এই তেল সিস্টেম লস দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দেন আমদানিকারকরা। আবার এভাবে প্রতিদিন তেল চুরি হওয়ায় সরকারও হারায় বিপুল রাজস্ব।

আসামিদের জামিনের বিষয়ে মিজানুর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছে। চক্রের মূল হোতা হারুন, জসিমরা পলাতক। যারা আটক হয়েছে তাদের চালান হারুনরা। দুদিন আগেও তাদের আটকের চেষ্টা করেছি। আমার জানা মতে, পলাতক আসামিরা জামিন পাননি। নিম্ন আদালত থেকে জামিন না পাওয়ায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছে তারা।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিস্ফোরণ—ফেসবুক লাইভে গিয়েই ‘স্পট ডেথ’ সেই তরুণ

ওসি আরও বলেন, অভিযানে জব্দ কোনো কিছুই তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। আসামিপক্ষ জব্দ দুটি ভাউজার চেয়ে আবেদন করলেও আদালত শুনানি করেননি। তাছাড়া জব্দ তেলের নমুনা বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) থেকে পরীক্ষা করিয়েছি। এগুলো রিফাইন সয়াবিন ও পাম অয়েল হিসেবে সার্টিফাইড করেছে তারা। কিন্তু ওইসময় আসামিরা বিভিন্ন মিডিয়াকে এগুলো জাহাজ ধোয়া পানি বলে দাবি করে।

বর্তমানেও চোরচক্র সক্রিয় আছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, চোরচক্র আমার আওতাধীন এলাকার বাইরে সাগরে গিয়ে চুরি করছে। আমার পর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। আমাদের স্পিডবোট নেভাল একাডেমির পেছনের লাল বয়া পযর্ন্ত যেতে পারে। এর বাইরে যাওয়ার সক্ষমতা আমাদের নেই। সক্ষমতা থাকলে সেখানে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করতাম।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!