১ লাখ জাল টাকা বানাতে খরচ ৪ হাজার, বিক্রি ১৫ হাজারে

আব্দুর রহিম শেখ ও ফাতেমা বেগম। সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। করেন জাল নোটের ব্যবসা। এক দশকের ব্যবসায়িক ক্যারিয়ারে তাদের রয়েছে জাল নোট ছাপানোর কারখানা।

১ লাখ এক হাজার টাকার নোট বানাতে তাদের খরচ ৪ হাজার, বিক্রি ১৫ হাজারে। আর ১ লাখ পাঁচশত টাকার নোট বিক্রি করেন ১২ হাজারে। এজন্য তারা ডিলারও নিয়োগ দিয়েছেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের ধরা পড়তে হলো ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) গুলশান বিভাগের পুলিশের হাতে।

সোমবার (১২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বাড্ডার নুরের চালা সাঈদ নগরের একটি ভাড়া বাসার ষষ্ঠ তলা থেকে আব্দুর রহিম শেখ, ফাতেমা বেগম, সহযোগী আনোয়ার হোসেন, ইসরাফিল আমিন এবং হেলাল খানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ সময় টাকা তৈরির সরঞ্জাম ও ৪৩ লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে পশুরহাট ও অন্যান্য বাজারে কয়েক কোটি টাকার জাল নোট ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো তারা।
জানা যায়, সারাদেশে জাল টাকা ছড়িয়ে দিতে তাদের রয়েছে ডিলার। জাল টাকা তৈরির পর ডিলারের কাছে প্রতি লাখ ১ হাজার টাকার জাল নোট বিক্রি করতেন ১৫ হাজার আর প্রতি লাখ ৫শ’ টাকার জাল নোট বিক্রি করতেন ১২ হাজার টাকায়। ডিলাররা সে টাকাগুলো ক্রয় করে গ্রাম অঞ্চলের পাইকারি জাল নোট বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতেন। তারা আবার খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতেন টাকাগুলো। খুচরা বিক্রেতারা এই টাকা গরুর হাটে ও স্থানীয় দোকান বা শপিং মলে চালাতেন। হাটে গরু বিক্রি করতে আসা সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে জাল নোটের মাধ্যমে গরু কিনে নিতেন।

গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, বাড্ডার সাঈদ নগরের একটি বাসা থেকে জাল টাকা তৈরি করার সময় এক দম্পতিসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করি আমরা। এ সময় ওখান থেকে ৪৩ লাখ টাকার জাল নোট এবং নোট তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করি। এই টাকা তৈরির কারখানাটি ফাতেমা ও রহিম দম্পতি পরিচালনা করতো। তারা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে এই পেশায় জড়িত। জাল নোটগুলো তৈরি করে ডিলারদের কাছে প্রতি লাখ ১ হাজার টাকার নোট ১৫ হাজার টাকায় এবং প্রতি লাখ ৫শ’ টাকার নোট ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। আবার ডিলারের হাত ধরে সে টাকা পাইকারি বা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পৌঁছে যেতো। খুচরা বিক্রেতারা জাল টাকাগুলো কোরবানি গরু ক্রয় করার সময় চালাতেন। অন্য সময় চালাতেন খুচরা দোকান বা শপিংমলে।

তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের কাছে জাল নোট তৈরি করে বাজারে ছাড়ার কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এএইচ/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!