হঠাৎ গণপরিবহন বন্ধে কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও সমন্বয়ের দাবিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ রাখে মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক সমিতি। ফলে আজ (শনিবার) সকাল থেকে বিপাকে পড়তে হয় সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে সবাইকে গুণতে হয় বাড়তি ভাড়া।

শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে নগরের সব সড়কে বন্ধ ছিল গণপরিবহন চলাচল। এ কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে৷

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে চলছে গণপরিবহন—বাড়বে ভাড়া

সরেজমিন দেখা গেছে, জামালখান, আগ্রাবাদ, জিইসি, হালিশহর, খুলশী, অলংকার, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সকাল থেকে ছিল শিক্ষার্থীদের জটলা। দীর্ঘক্ষণ গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষায় থাকার পর কেউ পায়ে হেঁটে, আবার কেউ রিকশা কিংবা অটোরিকশা করে গন্তব্য পৌঁছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, নির্দিষ্ট গন্তব্য যেতে তাদের গুণতে হয়েছে দ্বিগুণ ভাড়া৷ উঠানামা ভাড়া ১০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। গ্যাসচালিত গাড়িগুলোতে বিভিন্ন অজুহাতে আদায় করা হয়েছে বাড়তি ভাড়া। ।

এদিকে গণপরিবহন না থাকার সুযোগে রিকশা-অটোরিকশা চালকরা যে যার মতো বাড়তি ভাড়া আদায় করেছেন।

নগরের বেসরকারি পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থী নাহিদ ইমন বলেন, যেখানে ২০ টাকা দিয়ে গন্তব্য পৌঁছতাম সেখানে গুণতে হলো ১৫০ টাকা। বাড়তি ভাড়ার সঙ্গে ভোগান্তিও কম ছিল না ৷ তিনটা গাড়ি পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি।

সিটি কলেজ পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও গাড়ির দেখা পায়নি। মধ্যবিত্তদের অন্যতম ভরসা হচ্ছে গণপরিবহন। গণপরিবহন না থাকায় ভোগান্তি চরমে উঠেছে। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে কলেজে আসা-যাওয়া করতে হয়েছে।

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজিয়েট স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী মুনতাসীর মামুন বলে, বেলা ১২টায় ক্লাস। ঘর থেকে বের হয়েছি সকাল ১০টায়। কিন্তু রাস্তায় গাড়ি না থাকায় স্কুলে যেতে পারিনি। রিকশা, অটোরিকশনা সবাই নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাড়া চাইছে। শেষে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে রওনা দিলাম।

আরও পড়ুন: তেলের দাম বৃদ্ধি : রাতে পেট্রোল পাম্পে হইচই, সকালে অচল গণপরিবহন

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ভাড়া সমন্বয় না করে হঠাৎ তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেওয়ায় আমরা বেকায়দায় পড়েছি। এজন্য গণপরিবহনের চলাচল বন্ধ রাখি। পরে বিআরটিএ’র অনুরোধে আজ (শনিবার) দুপুর থেকে রাস্তায় গাড়ি নামানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর গণপরিবহনের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের দাবিতে আজ (শনিবার) থেকে নগরে বাস চালানো বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় বাস মালিকদের সংগঠন।

এআইটি/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!