সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাব সভাপতিকে হত্যার হুমকি, থানায় গেল অভিযোগ

সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাব সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তীকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, খোকন চন্দ্র নাথ নামে (৫০) এক ‘প্রতারক’ এই হুমকি দিয়েছে।

সৌমিত্র চক্রবর্তী দৈনিক কালের কণ্ঠ ও পূর্বকোণের সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। প্রতারক খোকন ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন সৌমিত্রের কাছে। টাকা না দিলে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) রাতে হোয়াটঅ্যাপসে কল দিয়ে হত্যার হুমকি দেন। বুধবার এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সৌমিত্র।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খোকন চন্দ্র নাথ উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মছজিদ্দা গ্রামের সতীশ মহাজন বাড়ির মৃত পরিমল চন্দ্র নাথের ছেলে। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাব সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন দেন খোকন। নিজের পরিচয় গোপন রেখে তিনি বলেন- ‘আমার দপ্তরে সাংবাদিক সৌমিত্র চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে শতাধিক অভিযোগ আছে। এখন ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠাতে হবে। আর না হয় এরকম সাংবাদিককে মেরে ফেলতে সময় লাগবে না!’

এ ঘটনার পর সৌমিত্র তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রতারকের নম্বর (০১৮৩১-৯৩২৬৭২) দিয়ে সন্ধান চান। এ সময় এলাকার মানুষের কাছ থেকে নাম ও ঠিকানা পান।

আরও পড়ুন: ‘নেতার কাণ্ড’—সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সরকারি জায়গা দখল, বাঁধা দিলেই হুমকি-ধমকি

এ বিষয়ে প্রেস ক্লাব সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, হুমকিদাতা একজন প্রতারক বলে আমি নিশ্চিত হয়েছি। সে পল্লী চিকিৎসক হয়ে খাগড়াছড়ি এলাকায় ‘এমবিবিএস ডাক্তার’ পরিচয়ে চিকিৎসা দিতে গিয়ে গণধোলাই খেয়েছিলেন। কুমিরার নিজ এলাকায় নানান অপকর্মের কারণেও গণধোলাইয়ের শিকার হন। শেষে নিজেকে মানবাধিকারকর্মী পরিচয় দেন। বিভিন্ন নেতাকর্মী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে ছবি তুলেন। সেই ছবি দেখিয়েই মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেন। এছাড়া এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান বানানোর প্রস্তাব দিয়ে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকাও হাতিয়ে নেন তিনি। আমার কাছে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির ঘটনায় আমি আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এ বিষয়ে খোকনের এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম চৌধুরী ও বাঁশবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, খোকন এলাকায় প্রতারক হিসেবে পরিচিত। মানবাধিকারের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করা তার কাজ। ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় ও নারী কেলেঙ্কারির জন্য সে পিটুনিও খেয়েছে।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই খোকন চন্দ্র নাথের সম্পর্কে যতদূর জানা গেছে, সে একজন বড় প্রতারক। একদিন সে থানায় এসে মানবাধিকারকর্মী পরিচয় দিয়ে স্যানিটাইজার বিতরণ করবে বলে জানায়। তার অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাব সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তীও আসবেন বলে জানান। কিন্তু পরে সে একাই এসে এসব দেয়। আমার সঙ্গে ছবি তুলে সে ছবিও তার আইডিতে ব্যবহার করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছেন সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ ফোরকান আবু, এম হেদায়েত ও এম সেকান্দার হোসাইন, সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরীসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

সালাউদ্দিন/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!