ঝাড়ফুঁকের গোলাপের পাপড়িতেও শেষ রক্ষা হলো না সিটি করপোরেশনের সেই কর্মকর্তার

সাক্ষীর গায়ে ঝাড়ফুঁক করা গোলাপ ফুলের পাপড়ি ছিটিয়েও শেষ রক্ষা হলো না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন রাজস্ব সার্কেল-২ এর উপ-কর কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আলী আকবরের। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের মামলায় তাকে সাড়ে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে গুনতে হবে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা।

রোববার (৩০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুনসী আবদুল মজিদের আদালত এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলী আকবর পটিয়া উপজেলার গৈড়লা টেগুটা এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চান্দগাঁও থানার রূপালী আবাসিক এলাকার একটি পাঁচতলা বাড়ির সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ এবং মালিকের নাম পরিবর্তনের জন্য বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন আলী আকবর। পরে ২০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে কাজটি সম্পন্ন হয়। এ বিষয়ে দুদকে অভিযোগ করলে ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরের বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকা থেকে আলী আকবরকে ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে তার বিরুদ্ধে দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক এইচএম আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় দণ্ডবিধির ১৬১ এবং ১৯৪৭ সনের ২ নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় নিয়মিত মামলা রুজু করেন। এ মামলা তদন্ত করেন দুদকের সহকারী পরিচালক (অব.) জাফর আহমেদ। তিনি মামলা তদন্তের পর ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দেন। পরে ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ এবং ১৯৪৭ সনের ২ নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এ মামলায় মোট ১০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।

দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু বলেন, দুদকের মামলায় ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উপ-কর কর্মকর্তা রাজস্ব সার্কেল-২ আলী আকবরকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় দুই বছর ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ১৯৪৭ সনের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো তিন মাস সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এর আগে আসামি আলী আকবর মামলার প্রধান সাক্ষী মো. জামাল উদ্দীনকে সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য হুমকি দেন। এছাড়া আদালতে সাক্ষীর গায়ে ঝাড়ফুঁক করা গোলাপ ফুলের শুকনা পাপড়ি ছিটায় যেন সাক্ষ্য না দেন। সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জামাল এ বিষয়ে বিচারককে অভিযোগ করেন। বিচারকাজে ব্যাঘাত ঘটানোর দায়ে আসামির জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। রায় ঘোষণার পর আসামিকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়।

আরএস/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!