সিআরবিতে হাসপাতাল: মন্ত্রিপরিষদ, রেলসচিব—৮ জনকে লিগ্যাল নোটিশ

সিআরবির ৬ একর জায়গায় হাসপাতাল তৈরির ঘোষণায় আটজনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ)।

বুধবার (১৪ জুলাই) বিএইচআরএফ পরিচালক ট্রাস্টি ও চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম জিয়া হাবিব আহসানের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম।

নোটিশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রামে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে বিবাদি করা হয়। তাদের আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পরিবেশ বিনষ্টকারী এই প্রকল্পের স্থান অন্যকোনো যৌক্তিক জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। যাতে পরিবেশ, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হানি না হয়।

প্রকল্পের স্থান পরিবর্তনে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে বিএইচআরএফ’র পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপযুক্ত আদালতে মামলা কিংবা উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করার ঘোষণাও দেয়া হয় নোটিশে।

জানা যায়, নগরের প্রাণকেন্দ্র সিআরবি’র উন্মুক্ত স্থানে শতবর্ষী গাছ কেটে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ও ১০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে। সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মিত হলে সেই হাসপাতালকে ঘিরে মানুষ ও যানবাহনের অবাদ চলাচল এবং বর্জ্য নিঃসরণসহ নানা কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।

সিআরবি বা শিরিষতলায় ছায়াদানকারী শতবর্ষী গাছ রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ বৃক্ষ ও পাখির বিচরণক্ষেত্রও এটি। সব মিলিয়ে এ জায়গা প্রকৃতির এক দারুণ মায়াজাল। সেই সঙ্গে এটি শহরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। এখানে রয়েছে ঐতিহাসিক স্থাপনা রেলওয়ে বিল্ডিং। শিশু-কিশোর থেকে প্রবীণদের আড্ডা ও খেলাধুলা এবং পহেলা বৈশাখসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে নগরের প্রধান স্থান এটি।

সিডিএ ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, ঐতিহাসিক, নান্দনিক ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় সিআরবির মত জায়গা ও স্থাপনাসমূহকে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া কেউ ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংস, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট ও গাছ নিধন করে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে, সংবিধানের ১৮-ক ও ২৪ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে।

এ বিষয়ে আবেদনকারী অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমরা মন্ত্রীপরিষদ সচিব ও রেল সচিবসহ আটজনের বিরুদ্ধে বিএইচআরএফ’র পক্ষ থেকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে প্রকল্পের স্থান পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। সমস্যা সমাধান বা ব্যর্থ হলে বিএইচআরএফ উচ্চ আদালতে রিট করতে বাধ্য হবে।

এএইচ/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!