টাকার পাহাড়—গোপন ব্যবসায়, ‘ভিওআইপি’ সাম্রাজ্যে র‌্যাবের চোখ

বাংলাদেশে এখনও সাম্রাজ্য রয়েছে ভয়েস ওভার আইপি (ভিওআইপি) ব্যবসার। নিষিদ্ধ হলেও একটি চক্র ঠিকই কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে করছে এ ব্যবসা। এ চক্রের এক সদস্যকে নগরের বাকলিয়া এলাকার একটি ভবন থেকে আটক করেছে র‌্যাব।

এ সময় তার কাছ থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এরমধ্যে ৩টি ভিওআইপি ব্যবসার মেশিন, ৪টি ল্যাপ্টপ, ১টি ট্যাব, ৮টি রাউটার, ১ হাজার ৩৫০টি মোবাইল সিম, ১ ব্যাগ সিম কার্ডের খালি প্যাকেট, ১টি সিসি ক্যামেরা, ১টি আইপিএস মেশিন, ২টি কী-বোর্ড, ৪টি মাউস, ১টি চার্জার ও ৪টি মাল্টিপ্লাগ, ১টি পেনড্রাইভ, ৫টি মডেম, ১টি আইপিএস ব্যাটারি ও ৪টি এয়ারকুলার উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাকলিয়া আবু জাফর রোডের কাশেম ম্যানশনের পঞ্চম তলার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র‌্যাব-৭ এর একটি দল।

আটক বদরুদ্দোজা (৩৬) চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানার মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মাওলানা শফিকুর রহমানের ছেলে।

আরও পড়ুন : ছদ্মবেশে সাগরে অভিযান, অস্ত্র—গুলিসহ র‌্যাবের জালে ৬ জলদস্যু

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে ভিওআইপি ব্যবসা নিষিদ্ধ হলেও এখনও এর সাম্রাজ্য রয়েছে। কোনোভাবে এটি বন্ধ করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ উন্নত প্রযুক্তির হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, মেসেঞ্জার ব্যবহার হলেও কমেনি ভিওআইপির মাধ্যমে সাধারণ ফোনে কল আদান-প্রদান। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কারণে বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে দেশ। বৈধ মাধ্যমে প্রতিদিন দেশে প্রায় দুই কোটি মিনিটেরও বেশি আন্তর্জাতিক কল আসছে। তারমধ্যে ৬০ লাখ থেকে ৭০ লাখ মিনিট কল আসছে সরকারি (বিটিসিএল) মাধ্যমে আর বাকি মিনিট আসছে বেসরকারি অপারেটর আইওএফ’র মাধ্যমে। অন্যদিকে ভিওআইপি’র মাধ্যমে প্রতিদিন সাড়ে তিন কোটি মিনিট কল আসছে অবৈধ কারবারিদের মাধ্যমে।

আরও জানা যায়, চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২০১৮ সালে ভিওআইপির ওপর সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। তারপর থেকে বন্ধ হলেও আবার একটি চক্র এ ব্যবসা শুরু করছে।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, নগরের বাকলিয়া থানার আবু জাফর রোডের কাশেম ম্যানশনের পঞ্চম তলার একটি বাসায় ভিওআইপি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে— এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিটিআরসির কর্মকর্তাসহ অভিযান পরিচালনা করি। অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতা বদরুদ্দোজাকে আটক করি। পরে তার দেখানো মতে একটি কক্ষ থেকে বিপুল পরিমাণ ভিওআইপি সরঞ্জাম উদ্ধার করি।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ব্যবসার কথা স্বীকার করেছে। ব্যবসার সঙ্গে তার আপন ছোট ভাই নুরুল হুদা ওরফে রনি জড়িত। তারা ২০০৪ সাল থেকে অবৈধভাবে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।

এএইচ/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!