শঙ্খ ঘাটে ডেকে নিয়ে শিশু ধর্ষণ, পিশাচের মুখোশ খুলছে নির্যাতিতরা

সাতকানিয়ায় ছয় বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সাবেক মেম্বারের ভাই মো. ইউচুপের (৪৭) বিরুদ্ধে।

জানা যায়, শঙ্খ নদীর ঘাটে শিম বাগানের ঝোঁপে ধর্ষণের পর রক্তাক্ত শিশুকে ১০ টাকা হাতে দিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে এমন আরো অভিযোগ থাকলেও প্রভাবশালী এ পরিবারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেন না এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সাতকানিয়া থানার খাগরিয়া মুন্সিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইউচুপ একই এলাকার বক্কর বাড়ির মৃত সোনা মিয়ার ছেলে। তিনি এলডিপির একজন সক্রিয় সদস্য বলেও জানা গেছে। তাঁর ভাই রফিকুল ইসলাম এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার।

এলাকাবাসী জানায়, ইউচুপের বিরুদ্ধে নারীদের উত্ত্যক্ত করাসহ বিভিন্ন সময় শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালী পরিবার হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস করে না কেউ। ছোট শিশুটিকে ধর্ষণের পর তার পরিবারকে নিজ ঘরে জিম্মি করার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে প্রভাবশালী ওই পরিবার। শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে বিষয়টি সামাজিকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

জানা গেছে, ইউচুপের দুই ছেলে প্রবাসী। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে। এদিকে মাসখানেক আগে রাতের আঁধারে রাস্তায় অন্য এক স্থানীয় নারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

স্থানীয় এক মাদ্রাসার নার্সারি পড়ুয়া শিশুর মা বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে আমি বাড়ির উঠানে মাছ কাটার সময় মেয়েকে কান্না করে আসতে দেখি। এ সময় তার প্যান্টে রক্ত লেগে ছিল। হাতে ছিল ১০ টাকা। এতেই আমার বুঝতে কিছু বাকি নেই। পরে মেয়েকে ঘরে নিয়ে কী ঘটেছে জানতে চাইলে মেয়ে বলে, ইউচুপ টাকার লোভ দেখিয়ে আমার মেয়েকে শঙ্খ নদীর ঘাটে শিম বাগানের ঝোঁপে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে হাতে ১০ টাকা দিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেয়। ঘরে আসার সময় মেয়ের প্যান্ট রক্তে ভেজা ছিল। পরে তাকে ঘরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম আওয়ামী যুবলীগ দক্ষিণ জেলার সাবেক সদস্য মো. হাসান মাহমুদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর ভিকটিমের পরিবারকে নিজ ঘরে নিয়ে গিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করে রফিক মেম্বর। সারাদিন শিশুর মাকে রফিকের ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে বুধবার সকালে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে দোহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করা হয়। বর্তমানে শিশুটি চমেকের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে বীভৎস এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়রা প্রতিবাদে ফুঁপে উঠে। এসময় খাগরিয়া ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু বক্কর বলেন, ইউচুপের চরিত্র খুবই খারাপ। প্রভাবশালী পরিবার হওয়ায় অনেকেই ইউচুপের নির্যাতনের শিকার হয়েও মুখ খুলতে পার না। এ ধর্ষণের ঘটনায় তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনার পর এলাকায় অনেকে মুখ খুলতে শুরু করেছে।

অপরদিকে আসামি ইউচুপকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মো. আব্দুল হান্নান। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ধর্ষণের বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

আরএস/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!