লাফিয়ে লাফিয়ে এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়ছে, কমছে চাহিদা

কয়েক দিনের ব্যবধানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম। এ অবস্থায় গ্যাসের দামের বৃদ্ধিতে কমে যাচ্ছে গ্যাসের ব্যবহার। তাই এখন খরচ সামলাতে পুরনো সেই চুলায় রান্নার দিকে ঝুঁকছেন আনোয়ারার সাধারণ মানুষ। এদিকে দাম বাড়ার পর থেকে গ্যাস বিক্রি কমছে বলে জানান বিক্রেতারা।

জানা যায়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ডলার ও জ্বালানি দামের সংকটের কারণে চলতি মাসের ২ ফেব্রুয়ারি নতুন করে ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজির দাম এক লাফে ২৬৬ টাকা বাড়ায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এ হিসাবে জানুয়ারিতে যেখানে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ছিল ১ হাজার ২৩২ টাকা, এখন তা বেড়ে ১ হাজার ৪৯৮ টাকা। এই অনুপাতে সাড়ে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত সব সিলিন্ডারের দামই বেড়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন গ্যাসের দোকান এবং গ্যাস সাপ্লায়ারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্যাসের দাম বাড়াতে বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। আগে যারা প্রতি মাসে গ্যাস নিতো তারা এখন দেড়-দুমাসে গ্যাস নিচ্ছে।

উপজেলার গ্যাসের ডিলার মেসার্স খাজা গরীবে নেওয়াজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল জলিল আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আগে প্রতিমাসে আমরা আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার বোতল বিক্রি করতাম। এখন বিক্রি নেমে দেড় হাজার থেকে দুহাজারে চলে এসেছে। ছোট বোতল আগে বিক্রি করতাম ১২শ টাকায় আর এখন ১৪টাকা। মাঝারি বোতলের দাম আগে ছিল ৩ হাজার ৪০০ টাকা, এখন ৪ হাজার ১০০ টাকা।

মেসার্স ইব্রাহিম এণ্ড ব্রাদার্স নামের আরেক ডিলার জানান, বিক্রি আগের চেয়ে ২৫ শতাংশ কমেছে। আগে ১২ কেজি বোতল বিক্রি করতাম ১ হজার ৩০০ টাকায়, এখন তা ১ হাজার ৫০০ টাকা। আগে ৩০ কেজি বিক্রি করতাম ৩ হাজার ২০০ টাকায় এখন তা ৩ হাজার ৭৫০ টাকায়।

জাকির আহমদ নামের এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, আমরা গ্যাসের বোতল হোম ডেলিভারি করে থাকি। আগের চেয়ে ব্যবসা অনেক কমে গেছে। এখন গ্যাসের জন্য এসে দাম জিজ্ঞেস করে অনেকেই চলে যায়।

তিনি ১২ কেজির বোতল ১ হাজার ৬৫০ টাকা এবং ৩৫ কেজির বোতল ৪ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানান।

রঞ্জন শীল নামের এক ক্রেতা বলেন, দিনকে দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। ছোট্ট একটা চাকরি করি মাস শেষে পরিচিতদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে চলতে হয়। এবার এক লাফে গ্যাসের দাম ৩০০ টাকা বেড়ে গেছে। কিন্তু চাকরির বেতন তো আর বাড়তেছে না! তাই গত মাস থেকে গ্যাস ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছি।

নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে গ্যাস বিক্রির বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মু. আব্দুল্লাহ আল মুমিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এখনো এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। কোনো অভিযোগ পেলে আমরা সাথে সাথে অভিযান পরিচালনা করব। তাছাড়া রমজানকে সামনে রেখে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যাতে অতিরিক্ত মূল্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি না করে এবং রমজানে যাতে ভোক্তাদের হয়রানির শিকার হতে না হয় সে বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যহত থাকবে।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!