লকডাউনে যত কৌশলে ‘লুকোচুরি’

দেশজুড়ে চলছে সাতদিনের ‘কঠোর লকডাউন’। লকডাউনকে ঘিরে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এসব নির্দেশনা মেনে চলা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মাঠে আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।

শনিবার (৩ জুলাই) নগরে তৃতীয় দিনের মতো চলছে লকডাউন। আগের দুইদিনের ধারাবাহিকতায় এদিনও নগরের প্রধান রাস্তাগুলোতে ছিল না চেনা ভিড়।

এদিকে নগরের স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের মধ্যে লকডাউন মেনে চলার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও বিধিনিষেধ মানছেন না এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়।

মূলত তরুণদের মধ্যে বিধিনিষেধ ভঙ্গের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বেশি। আবার বিভিন্ন পেশাজীবীও জীবিকার প্রয়োজনে ভাঙছেন বিধিনিষেধ। এছাড়া মাস্ক পরার ক্ষেত্রেও অনীহা লক্ষ্য করা গেছে অনেকের মধ্যে।

এবারের লকডাউনে অভিনব কয়েকটি কৌশলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়ার তৎপরতা দেখা গেছে নগরের কিছু মানুষের। অনেকে ‘সফল’ হয়েছেন, আবার অনেকে ধরা পড়ে গুনেছেন জরিমানা।

গাড়ির সামনে ব্যানার
লকডাউনে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে করোনা রোগীদের সেবার নামে নগরে ভাড়ায় চলছে সিএনজি অটোরিকশা।

শনিবার নগরের চৌমুহনী এলাকায় দেখা মিলল এমন একটি অটোরিকশার। ভাড়ায় চলা অটোরিকশাটির সামনে একটি মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানার ঝুলছিল।

এদিন নগরের সিটি গেইট এলাকায় যাত্রীবাহী একটি লেগুনা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেন সেনা সদস্যরা। খাদ্যপণ্য আনলোড ও ডেলিভারি কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যানার ঝুলিয়ে যাত্রী পরিবহন করছিল লেগুনাটি।

শাটার ‘হাফডাউনে’ ব্যবসা
শুরুটা তিনদিনের ‘সীমিত লকডাউনে’র সময় থেকেই। দোকানের শাটার অর্ধেক নামিয়ে নগরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে চলে পণ্য বিক্রি।

আবার শাটার পুরো নামিয়ে দোকানের সামনে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে কয়েকজন বিক্রেতাকে।

শনিবার নগরের ঝাউতলায় পুলিশের গাড়ির শব্দ পেয়েই রেললাইনের ওপর অস্থায়ী দোকানের পণ্য তেরপল দিয়ে ঢেকে দিতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের।

গলিতে লুকোচুরি
লকডাউনে নগরের প্রধান রাস্তাগুলোতে আগের মতো ভিড় না থাকলেও গলি-উপগলিতে অবাধে ঘোরাফেরা করছে কিশোর-তরুণরা। চলছে আড্ডা, খেলা।
এক্ষেত্রে পুলিশের উপস্থিতি টের পেলেই কিছু সময়ের জন্য সরে যান তারা। পুলিশ চলে গেলেই সেই কিশোর-তরুণরা ফের ভিড় করেন রাস্তায়।

অ্যাম্বুলেন্সে বরযাত্রী
সরকারি নির্দেশনায় রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সকে লকডাউনের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। এই ‘ছাড়ে’র সুযোগ নিচ্ছেন কিছু অ্যাম্বুলেন্স চালক। রোগীর আড়ালে যাত্রীর পাশাপাশি বরযাত্রী বহনের ঘটনাও ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) লকডাউনের প্রথম দিন রাতে নগরের বহদ্দারহাট মোড়ে এমনই এক বরযাত্রীবাহী অ্যাম্বুলেন্স আটক করেন দায়িত্বরত সার্জেন্ট। অ্যান্বুলেন্সটিতে ১২ জন বরযাত্রী ছিলেন।

বিচিত্র সব ‘মাস্ক’
এবারের লকডাউনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিতে বিচিত্র সব ‘মাস্কে’র দেখা মিলেছে।
পুলিশ ও সেনা সদস্যদের দেখে অনেকে সঙ্গে থাকা গামছা দিয়ে মুখ ঢেকেছেন। কেউ গামছা দিয়ে মাস্কের মতো মুখে বেঁধেছেন। আবার পরনের গেঞ্জির উপরের অংশ টেনে তুলে মুখ ঢাকতেও দেখা গেছে। এছাড়া ক্যামেরা দেখে কেউ কেউ হাত দিয়েই ঢাকেন মুখ।
অন্যদিকে কয়েকজনকে নারীকে দেখা গেছে সঙ্গে থাকা ওড়নায় মুখ ঢাকতে।

জেডএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!