নতুন প্রজন্ম জানবে মুক্তিযোদ্ধা মুছার বীরত্বের কথা, এগিয়ে এল জেলা প্রশাসন

মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মুছা স্মরণে নির্মিত হচ্ছে স্মৃতিসৌধ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর নেওয়া হলো এ অনন্য উদ্যোগ। রাউজান উপজেলার কাগতিয়া মাদ্রাসা এলাকায় সম্মুখযুদ্ধে আহত হন মুক্তিযোদ্ধা মুছা। পরে তিনি মারা করেন।

তাঁর আহত হওয়ার স্থানটিতেই এ স্মৃতিসৌৗধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্যনেল চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্বা কাজী আবদুল ওহাব।

রাউজান পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মোবারকখীল এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ইউছুপ খান জানান, ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর রাতে রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কাগতিয়া মাদ্রাসার রাজাকার ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করে। তখন রাজাকার বাহিনীর তৎকালীন কমান্ডার মরহুম ফয়েজ আহম্মদ টিক্কা খানের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাল্টা আক্রমণ করে। এ সময় রাজাকার বাহিনীর গুলিতে মুক্তিযোদ্ধা মুছা মারাত্মকভাবে আহত হন।

আরও পড়ুন: রাউজানে কিরিচ—ছুরি নিয়ে ধরা পড়ল ৫ ডাকাত

মুছা ৭নং রাউজান ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের অলিখান বাড়ির মরহুম ফোরক আহম্মদের ছেলে। আহত মুছাকে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধারা কাঁধে করে রাউজানের আবুরখীল এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে একটি ঘরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাঁকে। পরে সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মুক্তিযোদ্ধা মুছা।

তিনি আরও বলেন, শহীদ মুছার লাশ গোপনে দাফন করার উদ্যোগ নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। ওই সময় পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা আবুরখীল ঢুকে পড়লে মুছার লাশ হালদা নদীর তীরে ফেলে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ স্থানে চলে যান। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মুছার লাশ পাক বাহিনী কী করেছে তা আর কেউ জানতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, একাত্তরের ৭ অক্টোবর দিবাগত রাতে কাগতিয়ায় রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুছা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরদিন কাগতিয়ায় শোকরানা মাহফিলের আয়োজন করে রাজাকার বাহিনী। শোকরানা মাহফিলের সংবাদ তৎকালীন দৈনিক আজান পত্রিকায় প্রকাশও হয়।

আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে জখম—মহেশখালীর পৌর মেয়র জেলে

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্যনেল চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্বা কাজী আবদুল ওহাব আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুছার আত্নত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। রাউজানের কাগতিয়ায় যেখানে তিনি আহত হয়েছিলেন সেখানেই নির্মাণ করা হবে এ স্মৃতিসৌধ।

এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!