চট্টগ্রামে হঠাৎ বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। অন্যান্য রোগীর ভিড়ের মধ্যেই করোনা রোগীর বাড়তি চাপে শয্যা সঙ্কটে পড়েছে নগরের বেসরকারি হাসপাতালগুলো। খোদ বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই জানিয়েছে এমন তথ্য।
এদিকে করোনা রোগীদের সেবায় ধারণক্ষমতা বাড়াতে নগরের কাতালগঞ্জ পার্কভিউ হাসপাতালে করোনার বিশেষায়িত দুটি ফ্লোরের পাশাপাশি আরেকটি নতুন ফ্লোর চালু করা হয়েছে। তবে রোগীর সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি পরিসর যোগ হওয়ার পরও চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
পার্কভিউ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুরুর দিকে এ হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবায় দুটি ফ্লোরে ৫২টি কেবিনে সেবার ব্যবস্থা ছিল৷ এছাড়া ১২টি আইসিইউ বেড, এইচডিইউ বেড এবং হাই ফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থাও ছিল পর্যাপ্ত। কিন্তু কোরবানির ঈদের আগে থেকে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় করোনার আরেকটি বিশেষায়িত ফ্লোর চালু করেছে পার্কভিউ। ওই ফ্লোরে করোনা রোগীদের সেবায় নতুন ২৬টি কেবিন রয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত তিন দিন ধরে রোগীর চাপ অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন রোগীর স্বজন ভর্তির জন্য যোগাযোগ করছেন। সমানসংখ্যক রোগীর স্বজন যোগাযোগ করছেন আইসিইউর জন্য।
বর্তমানে ভর্তিকৃত অনেক রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। ফলে আইসিইউর জন্য অপেক্ষারত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ১২টি আইসিইউ শয্যায় রোগী ভর্তি থাকার পরও দৈনিক তিন থেকে চার জন রোগী আইসিইউ’র জন্য অপেক্ষায় থাকছেন৷
বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসারত রোগীর স্বজনরাও আইসিইউর জন্য যোগাযোগ করছেন। গড়ে দৈনিক ১০ থেকে ১৫ জন রোগীর স্বজন আইসিইউ শয্যার জন্য যোগাযোগ করছেন। বর্তমানে হাসপাতালে মোট ৮৪ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। তারমধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ১২ জন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কড়াকড়িতে শুরু ‘কঠোর বিধিনিষেধ’
পার্কভিউ হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার তালুকদার জিয়াউর রহমান আলোকিত চট্টগ্রামকে জানান, ২৩ জুলাইয়ের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী পার্কভিউ হাসপাতালে করোনার ৮৪টি কেবিনেই রোগী ভর্তি রয়েছে। কোনো কেবিনই খালি নেই। ভর্তির আশায় অপেক্ষায় রয়েছেন আরও ১৫ করোনা রোগী। ১২টি আইসিইউ বেডের মধ্যে একটিও খালি নেই। এরমধ্যেই দৈনিক ১০ থেকে ১৫ জন রোগীর স্বজন আইসিইউ বেডের জন্য যোগাযোগ করছেন৷
তিনি বলেন, করোনা রোগীর পাশাপাশি জেনারেল রোগীর চাপও বেড়েছে প্রচুর। ডেলিভারি রোগী, গ্যাস্ট্রোলিভার ও বুক ব্যথার রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। জেনারেল ওয়ার্ডেও কোনো কেবিন ও সিট খালি নেই।
জানা যায়, নগরের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে ম্যাক্স হাসপাতাল, ডেলটা হাসপাতাল, ন্যাশনাল হাসপাতাল, মেট্রোপলিটন হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার ও এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালের অবস্থাও প্রায় একই।
এ বিষয়ে ম্যাক্স হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার রঞ্জন প্রসাদ দাশগুপ্ত আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে ৬৭টি কেবিন রয়েছেন। রোগী ভর্তি রয়েছে ৬৯ জন। তারমধ্যে ১০ জন রোগী আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। দৈনিক ৭ থেকে ৮ জন রোগী ভর্তির জন্য যোগাযোগ করছেন।