১০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার। রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার বহদ্দারহাট–কালারপুল এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই গ্রুপ।
অভিযোগ ওঠে, বহাদ্দারহাট এলাকার জনৈক কায়সার পরকিয়ার জেরে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে তুলে আনতে গেলে বাধা দেয় স্থানীয় নাছির ও তার সহযোগিরা। এ সময় কায়সার গ্রুপের লোকজন কালারপুল এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।
এ সময় শহর বানুর নামে এক বয়স্ক মহিলার আঙুলে ছুরি চালায় কায়সার নিজেই। পরে আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘ইভটিজিং নয়’—পরকীয়ার জেরেই তাণ্ডব চালায় কায়সার গ্রুপ, ছুরিতেই নারী রক্তাক্ত
এ ঘটনাকে পুঁজি করে শুরুতেই অভিযোগ–পাল্টা অভিযোগ করে দুই গ্রুপ। পরে এটি গড়ায় মামলা–পাল্টা মামলায়। তাও সিএমপির পাঁচলাইশ থানায়। কিন্তু পুলিশ দুই পক্ষের দেওয়া আসামির তালিকা থেকে কাউকে ধরল না। সুযোগ বুঝে ধরে নিয়ে গেল সোহেল নামে বহদ্দারহাটের ফল ব্যবসায়ীদের এক নেতাকে।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় বহদ্দারহাট মোড় থেকে পাঁচলাইশ থানার সেকেন্ড অফিসার তালেবের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ফল ব্যবসায়ীদের নেতা সোহেলকে আটক করে নিয়ে যায়। সোহেলের পরিবারের অভিযোগ, বহদ্দারহাটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কথিত ‘নেতা‘ জাবেদের চাঁদাবাজির বাধা দেয় সোহেল। এর জেরে সোহেলের বিরুদ্ধে একের পর এক সাজানো মামলা দেওয়া হয়।
কিন্তু ব্যবসায়ীদের স্বার্থে যেকোন অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় জাবেদ ও কায়সার গ্রুপ সুবিধা করতে পারছিল না দীর্ঘদিন ধরে। এতে তারা সোহেলের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে। কালারপুলের ঘটনা নিয়ে পাঁচলাইশ থানায় অভিযোগ কিংবা মামলার আসামির তালিকায় সোহেলের নাম না থাকলেও তাকে আটকের পর বহদ্দারহাট ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিগগিরই তাকে ছেড়ে না দিলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
আরও পড়ুন: ‘ইভটিজিং’—রাতের আঁধারে লম্বা নাছির গ্রুপের তাণ্ডব, রক্তাক্ত ৩
এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমি সিএমপির একটি প্রোগ্রামে ছিলাম। তবে একজনকে ধরে নিয়ে আসছে এটা আমি জানি। কিন্তু কেন, কি বিষয়ে তা থানায় গিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো। এ বিষয়ে জানতে পাঁচলাইশ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তালেবকে একাধিক কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অভিযোগ আছে, পরকীয়ার জেরেই কায়সারের নেতৃত্বে সাব্বির, মহিসহ ১৫/২০ জনের সশস্ত্র গ্রুপ তাণ্ডব চালিয়েছে। এ সময় সশস্ত্র গ্রুপ পাঁচলাইশ থানার কালারপুর হাজী চান মিয়া রোডে খাজা গরীবে নেওয়াজ ভবনে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে তুলে আনতে গেলেই সংঘাত শুরু হয়। ওই নারীর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে থাকায় কায়সারের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। কায়সারের বিরুদ্ধে সিএমপির বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। রাতের আঁধারে তাণ্ডব প্রতিহত করতেই ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে আসে এলাকাবাসী।