মারধরের শিকার এক বৃদ্ধ মানবেতর দিন কাটাচ্ছে, সম্পত্তিও হাতিয়ে নিয়েছে বৌ ছেলে মেয়ে

হাটহাজারীতে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী মো. ইসহাক (৭৫) ও তাঁর ছেলে মো. আইয়ুব একে অপরের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন৷

অভিযোগকারী দুজনই উপজেলা পৌরসভার পূর্ব দেওয়ান নগর কালাচাঁন ফকির বাড়ির বাসিন্দা।

গত ৬ ডিসেম্বর ছেলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন ইসহাক। এরপর ১২ ডিসেম্বর মিথ্যা মামলা ও হয়রানিমূলক অভিযোগ থেকে রক্ষার আবেদন করেন আইয়ুব।

ইসহাক অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম ও বড় ছেলে মামুনুর রশিদ মিলে কৌশলে জমি ও বসতভিটা নিজেদের নামে লিখে নেন। পরে চাকরি থেকে অবসরে গেলে ছেলেরা কোনো ধরনের খরচ বহন করছে না। বরং সম্পত্তির লোভে ছোট ছেলে আইয়ুব তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এসময় আইয়ুবের সঙ্গে মারধরে যোগ দেন মেয়ের ঘরের নাতি জাবেদ আনোয়ার (২৬) ও জাহেদুল ইসলাম (২২)।

জানা গেছে, নাতি জাবেদ অনলাইন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও জাহেদ সরকারহাট ভূমি অফিসের কর্মচারী।

ইসহাক অভিযোগ করেন, তাঁকে জবাই করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী, সন্তান ও নাতিদের নির্যাতনের কথা লজ্জায় কাউকে না জানালেও নিরুপায় হয়ে তিনি ইউএনও এবং হাটহাজারী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অপরদিকে আইয়ুবের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তাঁর মেজবোন খুরশিদা বেগম ও তাঁর স্বামী মো. আবু হুরায়রা মিলে সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে তাঁর বাবাকে দিয়ে অভিযোগ করে সামাজিকভাবে মানহানি করছেন। এ কারণে তিনি মিথ্যা মামলা ও হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে আবেদন করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছেলে আইয়ুব বলেন, আমার বাবা একজন বয়স্ক মানুষ। তাঁকে কেন আমরা মারতে যাব? আমাদের সামাজিক সুনাম রয়েছে। আমার ভাই একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারী। আমাদেরকে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য আমার মেজবোন ও তাঁর স্বামী আমার বিরুদ্ধে ৭টি মামলাসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ ও পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছেন। আমরা এসবের সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার চাই।

অন্যদিকে নানাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নাতি জাবেদ বলেন, আমি নানাকে এ ধরনের কোনো হুমকি দিইনি। বরং তাঁকে প্রতিদিন সেবাযত্ন করছি।

যোগাযোগ করা হলে ইউএনও শাহিদুল আলম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বৃদ্ধ বাবাকে সন্তানরা মেরে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও অমানবিক। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে সমাজে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

যোগাযোগ করা হলে হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন সবুজ বলেন, বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করছি।

সিএম/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!