প্রবাসীকে পিটিয়ে কক্সবাজার বাস টার্মিনালে ফেলে গেল বিজিবির ৩ সদস্য

চেকপোস্টে তল্লাশির নামে এক প্রবাসীকে নির্যাতনের অভিযোগে টেকনাফ বিজিবির ৩ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের শীলখালী বিজিবি চেকপোস্টে রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত প্রবাসী আবদুল্লাহ (৩৫) বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঘটনার দিন রাত দেড়টার দিকে প্রবাসী আবদুল্লাহকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মালয়েশিয়ান প্রবাসী আবদুল্লাহ টেকনাফ উপজেলার কায়ুখালী পাড়ার মৃত শফিউজ্জামানের ছেলে।

আরও পড়ুন : মধ্যরাতে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে উল্টো ফাঁদে ৩ ভাই

ভুক্তভোগী আবদুল্লাহ বলেন, কিছুদিন আগে মায়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে মালেশিয়া থেকে দেশে আসি। আমার দুজন স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী টেকনাফ ও দ্বিতীয় স্ত্রী কুমিল্লায় থাকেন। দেশে ফিরে কুমিল্লা থেকে টেকনাফে এসেছিলাম মায়ের কবর জিয়ারত করতে। কবর জিয়ারত শেষে প্রথম স্ত্রী থেকে বিদায় নিয়ে সন্ধ্যায় টেকনাফ থেকে নীলদরিয়া নামের মিনিবাস করে কক্সবাজার ফেরার পথে শীলখালী বিজিবি চেকপোস্টে পৌঁছালে বিজিবির এক সদস্য আমার দেহ তল্লাশি করেন। পরে কিছু না পেয়ে একটি গোপন কক্ষে নিয়ে উলঙ্গ করে তল্লাশি করেন। এসময় বিজিবির সদস্যরা কিছু না পেয়ে ‘তোর কাছে ইয়াবা আছে’ বলে চড় মারেন। ‘স্যার আমার কাছে কিছু নেই’ বললেও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।

আবদুল্লাহ আরও বলেন, কিছুক্ষণ মারধরের পর একটি খালি স্থানে নিয়ে ইয়াবা আছে বলে বলপ্রয়োগ করে মলত্যাগ করান। এতেও ইয়াবা না পেয়ে বিজিবির দুই সদস্য ক্ষিপ্ত হয়ে শালার ব্যাটা তোর কাছে ইয়াবা আছে বলে আবারও মারধর করেন। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। এর আগে বিজিবির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না দিতে একটি ভিডিও ধারণ করে। কিছুক্ষণ পর মুমূর্ষ অবস্থায় আমাকে একটা গাড়িতে তুলে দেন। গাড়িটি আমাকে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল এলাকায় ফেলে দিয়ে চলে যায়। কক্সবাজার বাস টার্মিনালে মুমূর্ষ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় সংবাদকর্মী শামসুল আলম শ্রাবণ। তিনি সেখান থেকে আমাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

সংবাদকর্মী শামসুল আলম শ্রাবণ বলেন, উদ্ধারের পর জানতে চাইলে তাকে বিজিবি চেকপোস্ট ইয়াবা না পেয়ে মারধর করা হয়েছে বলে জানান। পরে আমি তার অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসি।

যোগাযোগ করা হলে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মো. ইফতেখার বলেন, অভিযুক্ত তিন বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিডি/এসআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!