‘পুঁজি ছাড়াই লাখপতি’—চট্টগ্রাম বন্দর সচিব সেজে চাকরির নামে বাণিজ্য

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব সেজে চাকরির নামে বাণিজ্য ও প্রতারণার অভিযোগে সেকান্দর আলী (৫৫) নামে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার সেকান্দর আলী নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা। তিনি মৃত জাফর আহম্মদের ছেলে।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তির বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার কথা হলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে কৌশলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে প্রতারণা’—অনুদানের নামে হাতিয়ে নিল ৪৩ হাজার টাকা

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেকান্দর পুলিশকে জানায়, তিনি নিজেকে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জেলার চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর বন্দরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিতেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মো. আবুল কাশেম (৬৯) নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার মুরগীহাটা লেইনের একজন ব্যবসায়ী। নুর মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি তার দোকানে প্রায়সময় আসা-যাওয়া করতেন। তিনি প্রতারক সেকান্দর আলীকে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব বলে তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে আবুল কাশেম তার ছেলেকে বন্দরে চাকরির জন্য নুর মোহাম্মদের মাধ্যমে সেকান্দরের সঙ্গে কথা বলেন।

সেকান্দর জানান, চাকরি পেতে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। তার কথায় সরল বিশ্বাসে ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে রিয়াজউদ্দিন বাজার মদিনা হোটেলের দ্বিতীয় তলায় প্রথমে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা দেন আবুল কাশেম। জামানত হিসেবে তাকে একটি খালি চেক দেন সেকান্দর।

আরও পড়ুন: সেই ‘প্রতারক’ খোকনকে ৬ দিনের রিমান্ডে নেবে পুলিশ

এরপর ২০২০ মালের মার্চ মাসে ছেলে চাকরিতে যোগদান করতে পারবে জানিয়ে অবশিষ্ট টাকা দ্রুত দিতে বলেন সেকান্দরকে। তার কথায় বিশ্বাস করে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টায় বাকি ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন আবুল কাশেম।

কিন্তু মার্চ মাস পেরিয়ে গেলেও ছেলের চাকরি কোনো খবর না পাওয়ায় সেকান্দরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পান।

আবুল কাশেম খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সেকান্দর একই কায়দায় পূর্ব পরিচিত আরও তিনজনের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এদের কারো চাকরি হয়নি।

শেষে ভুক্তভোগী আবুল কাশেম থানায় মামলা করলে তদন্তে নামে পুলিশ। গ্রেপ্তার হন প্রতারক সেকান্দর আলী।

আরও পড়ুন: ‘সিসিটিভি ফুটেজই কাল’ চোরচক্রের ৯ সদস্য পুলিশের জালে

কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নেজাম উদ্দীন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, সেকান্দর আলী একজন পেশাদার প্রতারকচক্রের সক্রিয় সদস্য । তার আয়ের একমাত্র উৎস মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা। বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীদের সরলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

ওসি আরও বলেন, চাকরিপ্রার্থীদের বন্দরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন কৌশলে প্রথমে অগ্রিম টাকা নেন সেকান্দর। পরে ভুয়া নিয়োগপত্র ছাপিয়ে প্রার্থীদের বাসায় এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাগজপত্র ডাকযোগে থানায় পাঠায়। থানা থেকে পুলিশ চাকরি প্রার্থীদের বাড়িতে গেলে ওই প্রতারক চাকরি হয়ে গেছে বলে চুক্তি অনুযায়ী সব টাকা নিয়ে নেন। এরপর যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এভাবে তিনি একাধিক প্রতারণা করেছেন।

আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!