রাউজানে খুন হওয়া অজ্ঞাত তরুণীর পরিচয় বের করেছে পুলিশ। সেইসঙ্গে খুনের দায়ে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
গত ২০ নভেম্বর উপজেলার ১০ নম্বর পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের আধারমানিক সিকদার ঘাটার দক্ষিণ পাশে সড়কে এক অজ্ঞাত তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটির গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল।
ঘটনার ৫১ দিন পর সেই তরুণীর পরিচয় জানা গেছে। নিহতের নাম আমেনা বেগম ওরফে রাহি ওরফে শারমিন (২২)। তিনি কক্সবাজারের কুতুবদিয়াপাড়ার নূর হোসেনের মেয়ে।
এ খুনের ঘটনায় আমেনার কথিত স্বামী নুরুল ইসলাম ওরফে বাদশাকে (২৪) ঢাকা থেকে আটক করা হয়েছে। সেইসঙ্গে দুই সহযোগী মো. আকতার হোসেন (৩৫) ও মো. মেহেরাজ প্রকাশ মিরাজকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন : ফোন পেয়ে তরুণীকে উদ্ধার করল পুলিশ, ধর্ষণ করে পালিয়ে গেছে ভণ্ড প্রেমিক
বাদশার বাড়িও কক্সবাজারের একই এলাকায়। তবে আকতার হোসেন ভোলার মনপুরা থানার দক্ষিণ সাকোচরিয়া এলাকার মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে। আর অটোরিকশা চালক মিরাজ নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হাতিদয়া বাজার এলাকার দক্ষিণ আদর্শ গ্রামের জসিম মাঝির বাড়ির মো. রাশেদ মিয়ার ছেলে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথা স্বীকার করেছে বাদশা। তার স্বীকারোক্তি মতে, আমেনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বাদশার। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েন আমেনা। এরপর বাদশাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন তিনি।
বিয়ের মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে আমেনার গর্ভপাত করান বাদশা। গর্ভপাতের পরও বিয়ে না করায় বাদশার নামে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন আমেনা। কক্সবাজারে দায়ের করা সেই মামলায় জেলে যেতে হয় বাদশাকে।
জেল থেকে বাদশাকে ছাড়াতে আমেনাকে বিয়ের আশ্বাস দেয় তার পরিবার। এরপর আমেনার হস্তক্ষেপে জামিনে বের হন বাদশা। ছাড়া পেয়েই আমেনাকে হত্যার ছক কষতে থাকে সে। গতবছরের ১৮ নভেম্বর বাদশা আমেনাকে নিয়ে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকে। সঙ্গে ছিল তার দুই সহযোগী আকতার ও মিরাজ। পরদিন সহযোগীসহ আমেনাকে নিয়ে নগরের দিকে আসতে থাকেন বাদশা। পথে আমেনার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে খুন করে বাদশা। এ সময় আকতার তাকে সহযোগিতা করে। আর অটোরিকশা চালাচ্ছিল মিরাজ। হত্যার পর তারা লাশ রাস্তার ধারে ফেলে চলে যায়।
রাউজান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কায়সার হামিদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অজ্ঞাত তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘটন করা হয়েছে। তরুণীর পরিবারের সদস্যরা লাশ শনাক্ত করেছে। ঢাকায় অভিযান চালিয়ে নুরুল ইসলাম বাদশাকে আটক করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর দুজনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সকালে তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।