তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যাচেষ্টা করায় স্কুল সুইপার আপন চন্দ্র মালিকে (৫২) ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এর বিচারক শরমিন জাহান শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন। আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আপন চন্দ্র মালি হাটহাজারী ফরহাদাবাদ মালি বাড়ির মৃত উমেশ চন্দ্র মালির ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদিপক্ষের আইনজীবী মো. রাশেদুল আলম রাশেদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আপন চন্দ্র মালির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৭০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শুনানি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মামলা পরিচালনায় আইনজীবী রাইসুল কবির হিমন, মোমিনুর রহমান, সাহেদ হোসেন, আবু মনসুর, আবু নাসের রায়হান ও ফেরদৌস মোরশেদ বাদীপক্ষকে সহযোগিতা করেন।
আরও পড়ুন: বন্ধ হয়ে গেল চুয়েট, বিকেলের মধ্যেই হল ছাড়তে হবে ছাত্রদের
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ মার্চ দুপুর ২টার দিকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শিউলী (ছদ্মনাম) বড় ভাইকে খাবার পৌঁছে দিতে পাশের স্কুল কাটিরহাট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে যায়। বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত সুইপার আপন চন্দ্র মালি শিউলীকে কৌশলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় শিউলী চিৎকার করলে তাকে শ্রেণিকক্ষের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। এতে শিউলীর ডান চোয়ালের হাড় ভেঙে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
এ সময় আপন চন্দ্র মালিকে হত্যার উদ্দেশ্য গলার দুপাশে চাকু দিয়ে কেটে স্কুলভবনের নিচের সেপটিক ট্যাংকিতে ফেলে দেয়।
এদিকে এক ঘণ্টা পরেও শিউলী ঘরে না ফেরায় তার সঙ্গে যাওয়া বান্ধবীর কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, স্কুল ভবনে ঢুকার পর সে ফিরে আসেনি। পরে খুঁজতে গিয়ে শিউলীকে সেফটি ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরের দিন ১২ মার্চ শিউলীর পিতা বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
একই বছরের ২৬ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাটহাজারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. তানজির হোসেন চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।