সকালের স্বস্তি বিকেলেই উধাও, আবারও ডু্বল চট্টগ্রাম

বৃষ্টি হলেই ডুবছে চট্টগ্রাম। এ যেন প্রতিদিনের চিত্র। বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। গত দুদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুর্ভোগের শেষ নেই।

আজ (রোববার) সকালে একটু স্বস্তি ফিরলেও দুপুর থেকে শুরু হওয়া বর্ষণ সেই স্বস্তিকে অস্বস্তিতে পরিণত করেছে।

বৃষ্টিততে আবারও ডুবেছে চট্টগ্রাম শহরের নিম্নাঞ্চল। এসময় বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ও অলিগলিতে কোথাও হাঁটু, আবার কোথাও কোমর সমান পানি জমে যায়। এসময় দুর্ভোগ নিয়ে পথ চলতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের।

সরেজমিন দেখা যায়, নগরের চকবাজার, কাপাসগোলা, মুন্সি পুকুর পাড়, কাতালগঞ্জ, বাদুরতলা, বহদ্দারহাট, পশ্চিম বাকলিয়া, ডিসি রোড, কে বি আমান আলী রোড, ফুলতলা, রাহাত্তারপুল, দেওয়ানবাজার, পূর্ব বাকলিয়া, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, আগ্রাবাদসহ আরও অনেক এলাকারর রাস্তা ও অলিগলিতে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি। এতে রাস্তায় তৈরি হয় যানজট । তবে রাস্তায় অন্যান্য গাড়ির তুলনায় রিকশার সংখ্যাই ছিল বেশি।

চকবাজার মোড়ে দেখা যায়, হাঁটু সমান পানি জমে গেছে। মোড়ে রিকশার জট। চকসুপার মার্কেট, মন্নান মার্কেটসহ আশপাশের নিচতলার দোকানে পানি ঢুকে গেছে। অটোরিকশা নিয়ে বিপাকে পড়তে দেখা গেল এক চালককে।

প্রায় একই দৃশ্য চোখে পড়ল ধুনীরপুলের কেবি আমান আলী রোড থেকে আতুরার দোকান পর্যন্ত। তবে চকবাজার এলাকার পানির চেয়ে নোংরা ও দুর্গন্ধ ছিল বাকলিয়া এলাকায়।

নগরের কে বি আমান আলী রোড-আলোকিত চট্টগ্রাম

এদিকে রাস্তায় জমে থাকা পানির কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসফেরত, ঘরমুখো মানুষ, গার্মেন্টস শ্রমিক ও পথচারীদের পড়তে হয় বিপাকে। আর এ সুযোগে বাড়তি ভাড়া আদায় করেছেন রিকশা চালকরা। অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়ায় পৌঁছেছেন বাসায়। আবার অনেকে কাকভেজা হয়ে হাঁটুপানিতে হাঁটা শুরু করেন জুতা হাতে নিয়ে। এসময় নারীরা বেশি দুর্ভোগে পড়েন।

চকবাজার মোড়ে কথা হয় লালখানবাজার থেকে আসা অন্তু দাশের সঙ্গে। তিনি বলেন, টিউশনে যেতে টেম্পু করে গুলজার নেমে পায়ে হেঁটে চকবাজার মোড়ে এসে আটকে পড়ি পানির কারণে। প্রতিদিন চকবাজার মোড় থেকে আতুরার দোকান যায় ২০ টাকা ভাড়ায়। আজ (রোববার) পানি উঠায় ৫০/৬০ টাকার নিচে কেউ যেতে চাইছে না।

এদিকে শুক্রবার (১৭ জুন) রাত থেকে শুরু হয় টানাবর্ষণ। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকাল থেকে থেমে থেমে চলতে থাকে বর্ষণ। এসময়ও নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়।

গত শুক্রবার ও শনিবার পানির নিচে ছিল চট্টগ্রাম। এসময় বিভিন্ন এলাকার মানুষকে থাকতে হয় পানিবন্দি। নিচতলার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয় বাসিন্দাদের। অনেকের বাসা-বাড়িতে জ্বলেনি চুলা, হয়নি রান্নাও।

আজ (রোববার) সকাল থেকে বৃষ্টি না থাকায় পানি নেমে যায়। কিন্তু দুপুরের পর শুরু হওয়া বৃষ্টি ও বিকালে জোয়ারের পানি যোগ হয়ে আবারও নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে রাতভরের বৃষ্টিতে—সকালেও পানিতে ভাসছে নগর, চরম জনদুর্ভোগ

জানতে চাইলে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আজ (রোববার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ১৪৭ দশমিক ৭ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে আজও (রোববার) বজ্রসহ প্রবল বৃষ্টি থাকতে পারে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!