টিসিবির পণ্য পেতে স্বল্প আয়ের মানুষের ভিড়, ১৭ জুনের পর কী হবে?

ভোগ্যপণ্যের বাজারে তেল, ডাল ও চিনির দাম বেশ চড়া। তাই নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ ঝুঁকছে টিসিবির (বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) পণ্যে। তবে দুদিন পর ১৭ জুন শেষ হয়ে যাচ্ছে খোলা ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি। এ অবস্থায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষের কপালে।

নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে গত ৬ জুন থেকে নগরের ২১টি পয়েন্টে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি শুরু করে টিসিবি। চলবে ১৭ জুন পর্যন্ত।

টিবিসির দেওয়া সাশ্রয়ী দামে ডাল, সয়াবিন তেল ও চিনি কিনতে প্রতিদিন ট্রাকের সামনে নারী-পুরুষের লম্বা লাইন বাড়ছে। ট্রাক আসার আগেই অনেকে এসে ভিড় জমান লাইনে দাঁড়াতে।

রোজার শুরু থেকে মাসব্যাপী চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, খেজুর, ছোলা ইত্যাদি বিক্রি করেছিল টিসিবি। সেসব পণ্য কিনতে ক্রেতাদের মাঝে বেশ সাড়া পড়েছিল। তবে প্যাকেজ ছাড়া পণ্য না মেলার অভিযোগ ছিল প্রচুর। অভিযোগের পরও টিসিবির পণ্য পেতে ট্রাকের সামনে ভিড় জমিয়েছে অসংখ্য মানুষ।

অন্যদিকে বাজারে মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, চিনির দাম এখনও বেশি। একই পণ্য টিসিবির ট্রাকে কেজিতে ১০-১৫ টাকা কম দামে বিক্রি করা হয় শুরু থেকেই। ফলে টিসিবির ট্রাকের পণ্যে মধ্য ও নিম্নবিত্তরা মানুষেরা অনেকটা স্বস্তি খুঁজে পায়।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, চিনি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়, মোটা দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়, সয়াবিন তেল প্রতিলিটার বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা দরে।

অথচ একই পণ্য টিসিবি বিক্রি করছে ১০-১৫ টাকা কমে। চিনি ও মসুর ডাল কেজি ৫৫ টাকা এবং সয়াবিন তেল লিটার ১০০ টাকা। অর্থাৎ বাজারের চেয়ে কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমে মসুর ডাল ও চিনি এবং লিটারে ৩০-৪০ টাকা কমে মিলছে সয়াবিন তেল।

জামালখানে টিবিসির পণ্য কিনতে আসা গৃহিণী সুচন্দা সরকার বলেন, বাজারে চিনি, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেলের দাম বেশ চড়া। টিসিবির ট্রাক থেকে কিনলে কেজিতে ১০-১৫ টাকা সাশ্রয় হয়। তাই একটু কষ্ট হলেও লাইনে দাঁড়িয়ে এখান থেকে পণ্য কিনি।

টিসিবি জানায়, প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল মিলিয়ে ১ হাজার কেজি পণ্য দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহে ৬ দিন চলে কার্যক্রম। প্রতিদিন সকাল ১০টা প্রতিটি পয়েন্টে বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়।

বর্তমানে চকবাজার ধুনীরপুল, জামালখান মোড়, আন্দরকিল্লা, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, চান্দগাঁও, কাটগড়, স্টিলমিল বাজার, ইপিজেড থানার সামনে, বন্দর থানার সামনে, আগ্রাবাদের হোটেল সাংরিলার সামনে, চট্টগ্রাম আদালতের সামনে, আলকরণ, নিউমার্কেট মোড়, বিবিরহাট, উত্তর কাট্টলী, হালিশহরে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তরা।

আন্দরকিল্লা মোড়ে টিসিবির পণ্য কিনতে আসা মো. সরোয়ার টিটু বলেন, গাড়ি আসার এক ঘণ্টা আগে নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকি। আমার মতো এমন অনেকেই এত কষ্ট করেন কিছু টাকা সাশ্রয়ের জন্য।

টিসিবি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান জামাল উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রাম বলেন, ৬ জুন থেকে আবারো নগরের ২১টি পয়েন্টে পণ্য বিক্রি শুরু করেছি। ১৭ জুন পর্যন্ত বিক্রি করা হবে। ক্রেতাদের ভালোই সাড়া পাচ্ছি।

এদিকে স্বল্প আয়ের মানুষরা চাইছেন ট্রাকে করে টিসিবির এই পণ্য বিক্রির প্রক্রিয়া চলমান থাকুক। উর্ধ্বগতির এ বাজারে এতে তাদের কিছু হলেও টাকা সাশ্রয় হবে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!