টিকিট ছাড়া ট্রেনে চড়লেই পুড়বে কপাল, কালোবাজারিদের মাথায় হাত

মুহূর্তেই টিকিট যাচাই, বিনা টিকিটে ভ্রমণকারীদের কাছ থেকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় ও কালোবাজারি রোধে এবার ট্রেনে পস মেশিন (পয়েন্ট অব সেলস) ব্যবহার করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ মেশিনের মাধ্যমে অনবোর্ড যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে। রেলওয়ের এমন উদ্যোগে কালোবাজারি রোধের পাশাপাশি জরিমানা আদায়ে গতি আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনে অনবোর্ড টিকিট যাচাইয়ের জন্য চট্টগ্রাম বিভাগে দুটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন নিয়মিত অভিযান করে জরিমানা করা হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর যাচাই করা সম্ভব ছিল না। সেই সুযোগে টিকিট কালোবাজারিরা এনআইডির ফটোকপিতে ছবি পরিবর্তন করে প্রতারণা শুরু করে। এ অনিয়ম রুখে টিকিট যাচাই দ্রুত করতেই রেলওয়েতে যুক্ত হচ্ছে পস মেশিন।

জানা গেছে, পস মেশিনের মাধ্যমে অনলাইন টিকিটে থাকা বারকোড স্ক্যান করে সহজেই যাত্রীর তথ্য যাচাই করা যাবে। এছাড়া কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা টিকিটে মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ যাত্রীর যাবতীয় তথ্য যাচাই করা যাবে।

আবার এই মেশিনের মাধ্যমে বিনা টিকিটে ভ্রমণকারীদের সহজেই জরিমানার আওতায় আনা যাবে। পস মেশিনের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ রেল টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকিট হস্তান্তর হয়েছে কিনা অথবা বিনা টিকিটের যাত্রীকে যাচাই করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবেন। যাত্রী নগদে কিংবা ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে টিকিটের ভাড়া পরিশোধ করবেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পস মেশিনে ইন্সটল করা অ্যাপের সঙ্গে রেলওয়ের টিকিটিং সিস্টেমের প্রধান ডাটাবেজ সংযুক্ত থাকবে। ফলে এ মেশিনের মাধ্যমে অনলাইন ও কাউন্টার থেকে দেওয়া টিকিট দ্রুত যাচাই করা যাবে। একইসঙ্গে যেকোনো রুটের টিকিট সহজেই দেওয়া যাবে। পস মেশিনটি রিয়েল টাইমে টিকিটিং সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত থাকায একটি টিকিট ইস্যু করার সঙ্গে সঙ্গেই তা সিস্টেমের মূল ডাটাবেজে আপডেট হয়ে যাবে। ফলে রিয়েল টাইমে ট্রেনের টিকিট সংক্রান্ত যেকোনো রিপোর্ট ডাউনলোড করে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন টিটিই।

রেলওয়ে বিভাগীয় বাণিজ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য ২৪টি পস মেশিন এসে পৌঁছেছে। তবে মেশিনগুলো কখন টাস্কফোর্সে যুক্ত হবে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি কেউ। মেশিনের ব্যবহার ও সার্ভিস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর টাস্কফোর্স যুক্ত হবে— এমনটিই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ইতি ধর আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, টিকিট যাচাইয়ের জন্য ২৪টি পস মেশিন হাতে পেয়েছি। মেশিনগুলো ব্যবহারের জন্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হবে। মেশিনগুলোর ব্যবহার ও সার্ভিস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর শিগগির টাস্কফোর্সে যুক্ত করা হবে।

যোগাযোগ করা হলে সাবেক রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, টিকিট যাচাইয়ে পস মেশিনের ব্যবহার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর ফলে টিকিট কালোবাজারি অনেকটাই কমে আসবে। এছাড়া দ্রুত সময়ে জরিমানা আদায় সম্ভব হবে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!