চাক্তাই—রাজাখালীতে যেভাবে চলছে সেমাই তৈরি

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে নগরের চাক্তাই ও রাজাখালী এলাকায়। এ কারণে সেমাইপল্লীতে বেড়েছে শ্রমিকদের ব্যস্ততা। বাজারের চহিদা পূরণে বিভিন্ন কারখানাগুলোতে এখন দিন-রাত চলছে সেমাই তৈরির কাজ।

গত দুবছর করোনার কারণে সেমাইয়ের বাজার ছিল মন্দা। বেচাবিক্রিও তেমন একটা ছিল না। এ কারণে কারখানার মালিকদেরও গুণতে হয়েছে লোকসান। এবার সেই লোকসান কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চলছে। তবে এবার ময়দার দাম বাড়তি হওয়ায় উৎপাদন খরচও আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। তাই আগের মতো লাভ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কারখানা মালিকরা।

রোববার (৩ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে চাক্তাই-রাজাখালী এলাকায় একাধিক সেমাই কারখানায় ঘুরে মিলেছে এমন তথ্য।

আরও পড়ুন: চাক্তাইয়ে অভিযান—লাখ টাকা জরিমানা খেল হিফস এগ্রো ফুড

ঢালাই সাজিয়ে শুকানো হচ্ছে সেমাই-আলোকিত চট্টগ্রাম

সরেজমিন দেখা যায়, কারখানার ছাদে লোহার এঙ্গেলে থাকা বাঁশের ওপর সারিবদ্ধভাবে সেমাই শুকাতে দেওয়া হয়েছে। উপরে খোলা অবস্থায় রয়েছে বাঁশের চালা।

চার-পাঁচজন শ্রমিক কাজে ব্যস্ত কারখানায়। এদের কেউ সেমাই শুকানোতে ব্যস্ত, কেউ ভাঁজ করায়, আবার কেউ ঝুড়িতে ভরে ওজন করছেন। তবে এসব কাজে স্বাস্থ্যবিধি কতটুকু মানা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ময়দা ও পানির মিশ্রণে কোনো প্রকার কেমিকেল ছাড়া এসব সেমাই তৈরি করা হয়। আবহাওয়া ভালো থাকলে একদিনের মধ্যেই সেমাই শুকিয়ে যায়। এরপর বিক্রির উদ্দেশ্যে ভরা হয় ঝুড়িতে। শেষে নগরের বিভিন্ন এলাকাসহ উপজেলাতে বিক্রির জন্য পাইকারি দরে এসব সেমাই কিনে নিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারখানার মালিক মো. আকবর জানান, রমজানের আগে থেকেই সেমাই তৈরির কারখানাগুলো কমবেশি চালু থাকে। তবে এখনও তেমন ডেলিভারি হচ্ছে না। এর আগে গত দুবছর করোনার কারণে ব্যবসায় লাভের মুখ দেখিনি। তারপরও এবার বেড়ে গেছে ময়দার দাম। রাস্তায় যানজট ও শ্রমিক সংকটের কারণে সরবরাহ ঠিকমতো করতে পারছি না। এবারও কী ক্ষতির মুখে পড়তে হবে কিনা এ শঙ্কায় আছি।

তিনি আরও জানান, এক টুকরিতে ৩৫ কেজি সেমাই ভরা হয়। প্রতি টুকরির পাইকারি দাম দেড় হাজার টাকা। সেই হিসাবে এক কেজি সেমাইয়ের পাইকারি দাম প্রায় ৪২.৮৬ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬০ টাকা।

আরও পড়ুন: চাক্তাইয়ের দুই ভোগ্যপণ্যের ফ্যাক্টরিতে তালা ঝুলিয়ে দিলেন ম্যাজিস্ট্রেট

স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব সেমাই তৈরি করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শুধু ময়দা ও পানির মিশ্রণে সেমাই তৈরি করা হয়। এখানে ক্ষতিকর কোনো রঙ ব্যবহার করা হয় না।

খোলা পরিবেশে সেমাই শুকানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এছাড়া কোনো উপায় নেই। সেমাই শুকাতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন সেই ব্যবস্থা আমাদের কারখানায় নেই। সে কারণে সূর্যের তাপের উপরই আমাদের ভরসা করতে হয়।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!