চট্টগ্রাম আদালতে পেশকারের গুণ্ডামি, এজলাসে আইনজীবীকে বেঁধে মারধর

চট্টগ্রাম আদালত ভবনে আইনজীবীকে মারধরের ঘটনায় প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের পেশকারসহ সব স্টাফকে প্রত্যাহার করে বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে ঘটনার প্রতিবাদে এজলাসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা।

রোববার (৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞা এ আদেশ দেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়া উদ্দিন এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য মনজুর আলমের ওপর হামলাকারী প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্জ সহকারীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের প্রত্যাহারপূর্বক ওএসডি করেছেন বিচারক। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়া উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, তদন্ত কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। বিভাগীয় তদন্ত কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সারকে আহ্বায়ক এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আবু সালেম মো. নোমান ও সিনিয়র সহকারী জজ মো. কফিল উদ্দিনকে সদস্য করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মামলা নিষ্পত্তিতে প্রতিবন্ধকতা ও সমাধান তুলে ধরলেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য মনজুর আলম একটি মামলার নথি দেখতে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে যান। এসময় আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুদ্দিন পারভেজ নথি দেখাতে টাকা দাবি করেন। এরপর পারভেজ সন্ধ্যা ৬টার পর আসতে বলেন আইনজীবী মনজুরকে।

আইনজীবী মনজুর পেশকার পারভেজের কথায় সন্ধ্যায় আদালতে গিয়ে মামলার পরবর্তী তারিখ দেখতে কজ লিস্ট না পেয়ে কোর্ট ডায়েরি চেক করেন। এ সময় সুমন নামে এক পিয়ন এসে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রশ্ন করেন, আপনি এটি কেন ধরেছেন? তিনি উত্তর দেওয়ার আগেই অজ্ঞাত আরেকজন এসে তাকে পেছন থেকে বেঁধে ফেলেন। পরে আদালতের দরজা বন্ধ করে আইনজীবী মনজুরের ওপর চড়াও হন পেশকারসহ পিয়ন আব্দুর রহিম ও সুমন।

পরে এ ঘটনা জানাজানি হলে সাধারণ আইনজীবীরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন। শুক্রবার ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকার পর রোববার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিক্ষুদ্ধ আইনজীবীরা প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দেন।

এ বিষয়ে সিনিয়র আইনজীবী টি আর খান তাহিম বলেন, আদালতের সামনে বিক্ষোভ ও বিচার দাবিতে আইনজীবীরা অবস্থান নেন। এসময় কিছু তরুণ আইনজীবী এজলাসে তালা মেরে দেন। পরে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞা তাদের ওএসডি করলে আমাদের কর্মসূচি সমাপ্ত হয়। এরপর সিনিয়র আইনজীবীরা চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞাকে বিষয়টি জানান। বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) সাইফুদ্দিন পারভেজসহ দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট সকলকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে বিভাগীয় মামলার ঘোষণা দেন।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!