চট্টগ্রামে স্কুলে বানায় রোহিঙ্গাদের এনআইডি, নেপথ্যে রাঘববোয়ালরা

চট্টগ্রামের হালিশহরের এক স্কুলে তৈরি করা হয় রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড)। আর এ কাজের নেপথ্যে আছে শক্তিশালী এক চক্র। যে চক্রে রয়েছে সাবেক প্রধান শিক্ষকসহ অনেক রাঘববোয়াল।

রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) তৈরি চক্রের ১০ সদস্যকে ইতোমধ্যে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনারের সরবরাহ করা কার্ড তৈরির ফরম-২ এবং জন্মনিবন্ধন ফরম উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) নগরের হালিশহর হাউজিং এস্টেট উচ্চ বিদ্যালয়ে গোপন সংবাদে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটকরা হলেন- শামসুর রহমান প্রকাশ শামসু মাস্টার (৬০), মো. কামাল হোসেন প্রকাশ মোহাম্মদ (৪৫), পারভীন আক্তার (২৫), মো. নুরুল আবছার (২৮), মো. ইয়াছিন আরাফাত (২২), ডাটা এন্ট্রি অপরাটের মো. নুর নবী ওরফে রাহাত (২৫), মো. মিজানুর রহমান (২৩), ফরহাদুল ইসলাম (২৮), ইমন দাশ (২০) ও মো. কামাল (৪২)। এদের মধ্যে মো. কামাল হোসেন ও পারভীন আক্তার রোহিঙ্গা।

আটক শামসুর রহমান প্রকাশ শামসু মাস্টার কক্সবাজারের পোকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে আলোকিত চট্টগ্রামকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম) পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন।

তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) হালিশহর হাউজিং এস্টেট উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের এনআইডি তৈরি চক্রের ১০ সদস্যকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি কার্ড তৈরির ফরম-২ এবং জন্মনিবন্ধন ফরম উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আটকদের মধ্যে শামসু মাস্টার কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের সংগ্রহ করে অপর আসামি নুরুল আবছারের কাছে পাঠাতেন। পরে নুরুল আবছার তাদের জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দিতেন। আর এই কাজে তাকে সহায়তা করতেন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপরাটের।

এছাড়া আটক শামসু মাস্টার কক্সবাজারের পোকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরির কাজে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরিতে যুক্ত থাকায় ২০২১ সালে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেছিল।

ডিসি ডিবি আরও বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের চক্রে আরও অনেক সদস্য জড়িত আছে বলে জানিয়েছে। তাদেরও আটকে অভিযান অব্যাহত আছে। এই চক্রকে ধরতে ডিবি পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছিল। অবশেষে চক্রের সদস্যদের আটক করতে সক্ষম হই।

এনইউএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!