চট্টগ্রামে গ্রেনেড বিস্ফোরণে অভিযুক্ত মুফতি ইজাহার পেলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ‘সংবর্ধনা’

বিস্ফোরণ মামলার আসামি হয়ে দেশ ছেড়ে যান লিবিয়ায়

২০১৩ সালে চট্টগ্রামের লালখানবাজার জামেয়া মাদ্রাসায় গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনার চার্জশিটভুক্ত আসামি ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের সভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী দেশে ফিরেছেন। তাঁকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সংবর্ধনা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও ১৪ নম্বর লালখানবাজার ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. বেলাল হোসেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বেলা ১২টায় মুফতি ইজাহারুল লালখানবাজার পৌঁছলে বাঘঘোনা মোড়ে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর লালখানবাজার মাদ্রাসায় গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন নিহত হন। ঘটনার পর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আইপিএসের চার্জার থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে দাবি করলেও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারটি তাজা গ্রেনেড উদ্ধার করে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতে আসামিরা নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিস্ফোরক দ্রব্যগুলো মজুত করে বলে অভিযোগপত্রে দাবি করে পুলিশ। এ ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন ও হত্যার অভিযোগে খুলশী থানায় তিনটি মামলা করে পুলিশ।

মামলা তদন্তের পর ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের সভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী ও তাঁর ছেলে হারুন ইজাহারসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিদের মধ্যে মুফতি ইজাহার ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন।

অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- আবদুল হাই ওরফে সালমান, হাবিবুর রহমান, মো. ইছহাক, মনির হোসেন, আবদুল মান্নান, তফসির আহমেদ ও মো. জুনায়েদ। তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩ ও ৪ ধারায় প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অভিযোগপত্রে ৪৬ জন সাক্ষী রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মোহরায় বুলবুলির দুই পায়ের ওপর গেল ডেমু ট্রেন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার মাওলানা আবু সালেহ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, লিবিয়া সফর থেকে মুফতি ইজহার গত বুধবার রাজধানীতে পৌঁছেন। এরপর গাড়ি করে চট্টগ্রাম আসেন। শিক্ষার্থী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ জনসাধারণ মিলে নগরের লালখানবাজার বাঘঘোনা মোড়ে হুজুরকে সংবর্ধনা দেন। এরপর সেখান থেকে স্লোগান দিতে দিতে হুজুরকে মাদ্রাসায় নিয়ে আসা হয়। তিনি মসজিদে এসে কিছু কথা বলেন। এ সময় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল হোসেনও বক্তব্য দেন।

তিনি আরও বলেন, হুজুর মাদ্রাসায় অবস্থান করবেন। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) মাদ্রাসার মসজিদে মুফতি হারুনের মেয়ের আকদে উপস্থিত থাকবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. বেলাল হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমরাতো জনপ্রতিনিধি, দাওয়াত দিলে যেতে হবে এলাকায়। ওনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটাতো রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। আর ওনি অভিযুক্ত হয়েও দেশের বাইরে থেকে ঘুরে এসেছেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জামেয়া মাদ্রাসার সরকারি মুহতামিম মাওলানা জালাল উদ্দিন, সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা মুসা, মাওলানা নুরুল হক ও মুফতি নুরুল হক।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!