চট্টগ্রামে আ’লীগ নেতাসহ যুবককে কুপিয়ে রক্তাক্ত করল সন্ত্রাসীরা

নগরের বায়েজিদে জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী ও মো. কাজী লিটন দুযুবককে কুপিয়েছে দূর্বৃত্তরা। বর্তমানে তাঁরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় জসিমের স্ত্রী বায়েজিদ থানায় মামলা করলেও কোনো আসামিকেই এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

বুধবার ( ২৪ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বায়েজিদ থানার বাংলাবাজার এলাকার গুলশান আবাসিকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহত জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী জালালাবাদ ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ‘গ’ ইউনিটের দপ্তর সম্পাদক এবং মো. লিটন জালালাবাদ ব্যাংক পাহাড় এলাকার বাসিন্দা।

এদিকে হামলার বিষয়ে আহত জসিমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি অসুস্থতার কারণে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে জসিমের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, বুধবার দুপুর পৌনে তিনটার দিকে ডেবারপাড় এলাকায় যান জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী। এছাড়া কমিটির বিষয়ে চন্দননগর এলাকার বাহার বাদল ভাইয়ের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে জসিম ও লিটনের ওপর হামলা চালায় আলামিন ও তাহের।

হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাবাজার এলাকার গুলশান আবাসিকের সামনে ব্রিজের ওপর উঠতেই পাশে থাকা তালের দোকান থেকে আলামিন ও তাহের চাপাতি নিয়ে জসিমের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাহের জসিমের ঘাড়ে কোপানোর চেষ্টা করলে লিটন হাত দিয়ে তাকে রক্ষা করে। কোপের আঘাতে লিটনের হাতে গুরুতর জখম হয়ে তিনি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। এ সময় জসিম ঘটনাস্থল থেকে সরে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল চালিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেলে পেছন থেকে তাকে তাড়া করে মাথায় কোপানোর চেষ্টা করা হয়। তিনি মাথা বাঁচাতে হাত দেন। আলামিন ও তাহের তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপায়। তারপরও তিনি মনোবল শক্ত রেখে মোটরসাইকেল চালিয়ে গুলশান আবাসিকের মুখে চলে আসেন। এ সময় আশপাশে থাকা মানুষরা আল আমিন ও তাহেরকে থামানোর চেষ্টা করলে তারা চাপাতি ড্রেনে ফেলে পালিয়ে যায়।

রহিমা বলেন, হামলার ঘটনায় শেরশাহ এলাকার চাঞ্চল্যকর রিপন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ইসমাইলও জড়িত। বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, ইসমাইল ঘটনার আগের দিন (২৩ মে) ঢাকা থেকে এসে এ ঘটনার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার সময় ইসমাইল হারিকেন ফ্যাক্টরির সামনে অটোরিকশা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। ঘটনা ঘটানোর পরে আল আমিন ও তাহেরকে সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যান ইসমাইল।

জসিমের সঙ্গে আলামিন ও তাহেরের সঙ্গে মূল শত্রুতার কারণ বলতে গিয়ে রহিমা বলেন, তারা শেরশাহ এলাকার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে। এসব বিষয়ে জসিমের কাছে বিভিন্ন মানুষ বিচার দেন। জসিমও এ চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটায়। শেরশাহ এলাকার শফি, সালাউদ্দিন, তানভীর ও সাদ্দামদের নেতৃত্বে দাপট নিয়ে চলাফেরা করে আল আমিন ও তাহের।

এদিকে ঘটনার দুদিন আগে (২২ মে) ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বায়েজিদ ক্যাফেতে সি ইউনিটের একটি প্রস্তুতিমূলক সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে শেরশাহ এলাকার নাজিম ও কুদ্দুসের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় জসিমের।

চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জসিমের বাম হাতের কব্জির ওপর ও বাম পায়ের রানে গুরুতর জখম হয়েছে। হাতের শিরা কেটে গেছে। বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার করতে হবে। সুস্থ হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।

যোগাযোগ করা হলে বায়েজিদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফেরদৌস জাহান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, জসিম ও লিটনের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন জসিমের সহধর্মিনী রহিমা বেগম। এতে আল আমিন, তাহেরসহ করে আরো পাঁচ থেকে ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।

আরএস/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!