চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের ৩ নেতার সুতোয় ঝুলছে ১৫ ইউনিট সম্মেলন

আওয়ামী লীগের তিন নেতার সুতোয় ঝুলছে চট্টগ্রাম নগরের তিন ওয়ার্ডের ১৫ ইউনিটের সম্মেলন। এসব ইউনিট কমিটি গঠন প্রক্রিয়ার পুরোটাই এখন অনিশ্চয়তায় বলে জানা গেছে। দায়িত্ব দিয়ে উল্টো বিপাকে পড়েছেন নগর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

এ নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃনমূলে বাড়ছে ক্ষোভ। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন নেতার আঙুলের তীর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের অসুস্থতার দিকে। দুয়েক নেতা অসুস্থ থাকলেও সম্মেলন না হওয়াকে কেউ কেউ অজুহাত হিসেবেও দেখছেন।

নগর আওয়ামী লীগের দোষারোপের এমন রাজনীতিতে বলী বলে মনে করেন তৃনমুল নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, ৯১ ইউনিটের সম্মেলন সফল হলেও এই তিন নেতার সুতোয় আটকে আছে ১৫ ইউনিটের সম্মেলন।

আরও পড়ুন : নভেম্বরেই নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি—আলোচনায় ৭ নেতা, আড়ালে ২

বিতর্কমুক্ত থাকতে এবং গঠনতন্ত্র অনুসরণ করেই নগর আওয়ামী লীগের এই তিন নেতাকে তিন ওয়ার্ডের ১৫ ইউনিট সম্মেলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দায়িত্ব দিয়ে এখন উল্টো বিপাকে পড়েছেন নগর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

তাঁরা বলেছেন, এরইমধ্যে ১২৯ ইউনিট কমিটির মধ্যে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসরণে ৯১ ইউনিট কমিটি গঠন হয়েছে। বাকি ৩৮ ইউনিট সম্মেলন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে। তবে ৩৮ কমিটির মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের তিন সহসভাপতিকে তিন ওয়ার্ডের ১৫ ইউনিট সম্মেলনের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁরা এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয়।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের ইউনিট সম্মেলন সফল করতে নগর নেতাদের নিজ নিজ ওয়ার্ড কিংবা আশপাশের ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত এক মাসে অন্তত ৯১ ইউনিটের সম্মেলন শেষ হয়েছে। বাকি ৩৮ কমিটির মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের তিন সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল ইসলাম দোভাষ এবং আলতাফ হোসেন বাচ্চু তিন ওয়ার্ডের ১৫ ইউনিট সম্মেলনের দায়িত্ব পান।

এরমধ্যে খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ও ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড, আলতাফ হোসেন বাচ্চু ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ ও ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ড এবং জহিরুল আলম দোভাষ ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের সম্মেলনের দায়িত্বে রয়েছেন।

ইউনিট সম্মেলনের দায়িত্ব পেলেও দীর্ঘ সময়েও তাঁরা সম্মেলন শেষ করতে পারেনি। এই তিন সহসভাপতিই প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। বর্তমানে তারা উপমন্ত্রী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে খোরশেদ আলম সুজনের আলাদা একটি বলয় রয়েছে নগর ছাত্রলীগে।

ইউনিট সম্মেলনের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমাকে চসিকের ৯ নম্বর ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাও মৌখিকভাবে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে একজন আহ্বায়ক ও দুজন যুগ্ম আহ্বায়ক রয়েছে। এরমধ্যে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদ মামুন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল আলম জসিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনিও অসুস্থ বলে জানান।

আরও পড়ুন: কুড়ালের ৫ কোপ আওয়ামী লীগ নেতার গায়ে, মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন হাসপাতালে

আফসারুল আমিনের এলাকা। আমি তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করি। তিনি অসুস্থ থাকায় আমাকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পরামর্শ করে সম্মেলনের কথা বলেন। কিন্তু ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ইসমাইলের ছেলের বিয়ের কারণে তিনি সময় দিতে পারছেন না। তাহলে আমি কাকে নিয়ে সম্মেলন করবো?

একই প্রসঙ্গে নগর আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমাকে ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের তিন ইউনিট সম্মেলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মারা যাওয়ায় সম্মেলন কিছুদিন পিছিয়ে দিয়েছি।

অপরদিকে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলতাফ হোসেন বাচ্চু আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমাকে ২৭ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ ইউনিটে সম্মেলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এসব ইউনিটের সম্মেলন হবে। আপাতত ফরমগুলো যাচাই-বাছাই চলছে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!