সালেহ আহমেদ, নাকি সাদিয়া—কোন পরিণতির দিকে কিশোর কামাল?

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বাড়ছে খাল-নালায় পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা। আবর্জনায় ভরা অরক্ষিত খাল-নালাগুলো এখন সাধারণ মানুষ ও পথচারীদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। একের পর পর ঘটছে মৃত্যুর ঘটনা। তবে এ নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের।

গত ২৫ আগস্ট মুরাদপুর এলাকায় চশমা খালে পড়ে নিখোঁজ হন চকবাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত তার লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। টানা উদ্ধার অভিযানসহ সব চেষ্টায় একরকম ব্যর্থ হয়।

এদিকে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) চিটাগং শপিং কমপ্লেক্সের বিপরীতে ভূমি অফিসের সামনে চশমা খালে নেমে পানির স্রোতে ভেসে যায় কিশোর মো. কামাল (১৪)। এর মধ্যে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কামালের খোঁজ মিলেনি। অথচ ছেলের সন্ধানে এখন অপেক্ষায় আছেন বাবা।

আরও পড়ুন: চশমা খালে হারিয়ে গেছে কিশোর, অভিযানে নামল ফায়ার সার্ভিসের ৩ ইউনিট

গত সোমবার দুপুরে নিখোঁজ হওয়া পর মঙ্গলবার বিকেলে কামালকে উদ্ধারে নামে ফায়ার সার্ভিস। ওইদিন রাত ৮টার দিকে প্রথমদিনের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হয়। পরদিন বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল নয়টা থেকে আবারও উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিস। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশের কোনো খোঁজ মিলেনি।

কামালের লাশ আদৌ মিলবে কি-না, নাকি নিখোঁজ সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদের ভাগ্যই বরণ করতে হয় এমন শঙ্কা নিখোঁজ শিশুর বাবা কাউসারের।

কামালের বাবা কাউসার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘জীবিত অথবা মৃত আমি ছেলেকে চাই। ঘটনার তিনদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর আগে নিজে খালে নেমে অনেক খোঁজ করেছি, পায়নি। আদৌ কি ছেলেকে খুঁজে পাব নাকি মুরাদপুরের নালায় পড়ে হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তির মতো আর খুঁজে পাওয়া যাবে না সেই শঙ্কায় আছি। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, আমার ছেলের লাশটা অন্তত আমাকে ফিরিয়ে দিক।

এদিকে লাশ উদ্ধারের আশাবাদী অভিযান চালিয়ে যাওয়া ফায়ার সার্ভিস। তারা বলছে, খালে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনার কারণে উদ্ধার তৎপরতা চলছে ধীরগতিতে। এ কারণে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

যোগাযোগ করা হলে বায়েজিদ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার তানবির আহম্মেদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, খালে এত বেশি ময়লা-আবর্জনার মধ্যে লাশ খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন ও দুরূহ ব্যাপার। তবুও আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। আগে ময়লা-আবর্জনাগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে। এসব পরিষ্কার হলেই আশাকরি আমরা নিখোঁজ ছেলের লাশটি খুঁজে পাব এবং তার বাবারে হাতে তুলে দিতে পারব।

আরও পড়ুন: মামলার পরও বেপরোয়া—কিশোর গ্যাংয়ের ৫ জন ধরা পড়ল অস্ত্রসহ

প্রসঙ্গত, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে আগ্রাবাদ এলাকার একটি খালে তলিয়ে যান আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া। এরপর প্রায় চার ঘণ্টা চেষ্টা পর সেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওইদিন দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঘটনাস্থলের কাছে নালার অবর্জনার স্তূপে আটকে থাকা অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়।

এর আগে ৩০ জুন রাস্তা থেকে পাশের চশমা খালে যাত্রীসহ তলিয়ে যায় একটি অটোরিকশা। পরে সুলতান ও যাত্রী খাদিজা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!