কোরবানির আগেই মসলার বাজারে আগুন

কোরবানির ঈদের বাকি রয়েছে দেড় মাস। ভোজ্যতেল, গমের পর এবার অস্বাভাবিক হারে দাম বেড়েছে মসলা পণ্যের। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মরিচ, হলুদসহ সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে। অথচ করোনাকালীন সময়ে গতবছর মসলার বাজারে ছিল ভিন্ন চিত্র।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সরকারি নিষেধাজ্ঞা, বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি ও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মজুত প্রবণতার কারণে মসলার বাজার চড়া। এছাড়া বাড়তি চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ব্যবস্থায় ধীরগতির কারণেও বাজার অস্থির হয়ে উঠছে।

এদিকে সচেতন মহল বলছে, এখন থেকে বাজার মনিটরিং কমিটি ও প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো না হলে মসলা পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন: কোরবানির পশু জবাই, মাংস প্রস্তুত ও সংরক্ষণ—যা যা করবেন, যা করতে মানা

সরেজমিন খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন পাইকারি দোকান ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৮ থেকে ৯ টাকা বেড়ে ৪১ থেকে ৪৩ টাকায় এবং খুচরা বাজারে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুনের দাম কেজিতে ৩৮ থেকে ৪৩ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদার দামও কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় এবং খুচরা বাজারে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি চলছে।

এদিকে শুকনো মসলা পণ্যের মধ্যে গত কয়েকদিনে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শুকনা মরিচের। শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত! পাইকারি বাজারে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা ও খুচরা বাজারে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে পঞ্চগড়ের মরিচ প্রতিকেজি ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮০ টাকা, ভারতীয় মরিচ ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০ টাকা, মিয়ানমারের মরিচ ১৯৮ টাকা থেকে বেড়ে ২৩০ টাকা এবং কুমিল্লার মরিচ ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা কেজি হয়েছে। এছাড়া আস্ত হলুদ ৯৬ টাকা থেকে বেড়ে ১০৬ টাকা, ভারতীয় হলুদ ১১৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে।

অন্যদিকে শুকনো মসলার মধ্যে জিরা, দারুচিনি, কালো মরিচ, এলাচ ও সরিষার দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহে প্রতি কেজি জিরা ৩৪০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, দারুচিনি ২৯৮ টাকা থেকে ৩০৮ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ২০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০ টাকা, কালো গোলমরিচ ৫৩০ টাকা থেকে ৫৮০ টাকা এবং এলাচ ১ হাজার ৪২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬শ টাকা।

এদিকে মসলার দাম বাড়তে থাকায় অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। বাজারে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন মসলা কিনতে আসা মো. মামুন বলেন, প্রতিবছর কোরবানির ঈদের আগেই বেড়ে যায় সবরকম মসলার দাম। এ বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে মনিটরিং করা উচিত। অথচ কারো কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। দেশটা যেন মগের মুল্লুক হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর হাটে মানতে হবে ২১ নির্দেশনা

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের রহিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সেলিম চৌধুরী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, দেশের মসলার চাহিদা প্রায় ৯০ ভাগ আমদানি করতে হয়। সরকার পেঁয়াজ আমদানির পারমিশন বন্ধ রাখায় বাজারে পেঁয়াজসহ সব ধরনের মসলার দাম ধীরে ধীরে বাড়ছে।

যোগাযোগ করা হলে খাতুনগঞ্জ বণিক ও শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও ডলারের দাম বাড়ায় মসলার দাম কিছুটা বেড়েছে। স্থানীয় কৃষকদের রক্ষায় ভরা মৌসুমে দেশি পেঁয়াজের ভালো বাজার পেতে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছে সরকার।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!