কেএসআরএমের অক্সিজেনে শ্বাস নিবে বাংলাদেশ

করোনার সংক্রমণ বাড়ায় দেশে অক্সিজেনের চাহিদাও বেড়ে গেছে বহুগুণ। এতে অক্সিজেন সংকট প্রতিদিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। জরুরি মুহূর্তে অক্সিজেনের অভাবে বহু প্রাণ অকালে ঝরছে। এ সংকটময় অবস্থায় করোনা চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ শুরু করেছে শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত নির্মাণ শিল্পগ্রুপ কেএসআরএম।

শুরুতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করেছে কেএসআরএম। এরপর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সরবরাহ করা হয়। বিনামূল্যের এই অক্সিজেন পর্যায়ক্রমে সরবরাহ করা চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে।

শুধু চট্টগ্রাম নয়, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, বরিশালসহ দেশজুড়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের। বিশেষ করে যেসব হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট থাকবে সেখানে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া হবে।

দেশের যেকোনো মানবিক দুর্যোগে এগিয়ে আসে কেএসআরএম। এরই ধারাবাহিকতায় করোনার কঠিন পরিস্থিতিতে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে এলো জনপ্রিয় এই শিল্পগ্রুপ। অক্সিজেন প্ল্যান্টে সংকটকালীন এই সময়ে অক্সিজেন উৎপাদন করে তা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে তারা।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় কেএসআরএমের অক্সিজেন প্ল্যান্ট রয়েছে। দুই কম্প্রেসারের ওই প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা প্রতি ঘণ্টায় এক হাজার কিউবিক মিটার। কারখানায় ব্যবহারের জন্য এতদিন অক্সিজেন উৎপাদন হলেও সম্প্রতি মেডিকেল অক্সিজেনও উৎপাদন করা হচ্ছে। উৎপাদিত এই অক্সিজেনই সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

এছাড়া দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে কেএসআরএম স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ নানা সেক্টরে পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, খাদ্যসামগ্রী এবং নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে চলেছে। স্বাস্থ্যখাতে অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে অতীতের মতো ফের এগিয়ে এসেছে কেএসআরএম।

ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৮ জুলাই) চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেন হস্তান্তর করা হয়। হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে এ উপলক্ষে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জনসহ কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, হাসপাতালে বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ কেএসআরএমের মহতি ও জনহিতকর উদ্যোগ।

তিনি আরও বলেন, কেএসআরএম শুধু সিলিন্ডার ভর্তি অক্সিজেন দিয়েই দায়িত্ব শেষ করবে না, সিলিন্ডার খালি হলে আবার অক্সিজেন ভর্তি করে দেবে। এতে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবে অসংখ্য প্রাণ।

কেএসআরএমের মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে করোনা প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। শুধুমাত্র জরুরি মুহূর্তের অক্সিজেন না পেয়ে মারা যাচ্ছে অনেক মানুষ। আমরা মনে করি যেকোনো দুর্যোগ সরকারের একার পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়, যদি না বিভিন্ন সেক্টর এগিয়ে আসে। আমরা সেই প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে ‘মেডিকেল অক্সিজেন’ উৎপাদন করে সরবরাহ শুরু করেছি বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আমরা চাই প্রতিটি প্রাণ বেঁচে থাকুক, রক্ষা পাক অকাল মৃত্যুর হাত থেকে। কারণ প্রতিটি প্রাণে লুকিয়ে থাকে হাজারো স্বপ্ন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম, ঊধ্বর্তন ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, মেডিকেল অফিসার ডা. মেজবাহ উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক আবু সুফিয়ান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিজান উল হক।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!