কর্ণফুলীর এক পাশে চর, অন্য পাশে বাড়ছে গভীরতা—হুমকিতে শাহ আমানত সেতু

শাহ আমানত সেতুর নিচ থেকে চাক্তাই খালের মোহনা এলাকায় তিন কিলোমিটার চর জেগে সংকীর্ণ হয়ে গেছে কর্ণফুলী নদীর গতিধারা। নদীর এক পাশে চর ও আরেক পাশে গভীরতা বাড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে শাহ আমানত সেতু।

রোববার (২২ মে) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশের গভীরতা ও দখল জরিপ-২০২২’ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে ‘কর্ণফুলী নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন’ নামের সংগঠন।

আরও পড়ুন: দূর হচ্ছে কর্ণফুলীর ‘অগ্নিভয়’

প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহ আমানত সেতুর উত্তর পাশে ১ ও ২ নম্বর পিলারের মাঝখানে গভীরতা ফিরিঙ্গীবাজার এলাকার পরিমাপ অনুযায়ী থাকার কথা ২৫ ফুট, সেখানে বর্তমান গভীরতা হচ্ছে মাত্র ৭.৭ ফুট। ২ ও ৩ নম্বর পিলারের মাঝখানে চর জেগে উঠেছে, সেখানকার চরে জেলেদের মাছ ধরতে দেখা গেছে। সেতুর ৩ ও ৪ নম্বর পিলার এলাকায় স্বাভাবিক গভীরতা থাকার কথা ৩৮ ফুট, সেখানে বর্তমান গভীরতা ৬৪.৭ ফুট। ৪ ও ৫ নম্বর পিলার এলাকায় নদীর স্বাভাবিক গভীরতা থাকার কথা ২৮ ফুট, কিন্তু ৪ পিলারের পাশে গভীরতা ৭৮.৬ ফুট। এ গভীরতার কারণে অতি বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে শাহ আমানত সেতু। ধসে যেতে পারে সেতুর দক্ষিণ পাশের গাইড ওয়াল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০০০ সালে কর্ণফুলী নদীর প্রস্থ ছিল ৯৩০.৩১ মিটার। কিন্তু বর্তমানে এ নদীর প্রস্থ দাঁড়িয়েছে ৪১০ মিটার। গত ২২ বছরে বিলীন হয়ে গেছে নদীর প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা। কর্ণফুলী নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ চর পাথরঘাটা ব্রিজঘাট এলাকায় ২৫ ফুট, মাঝ নদী বরাবর ৩৮ ফুট, উত্তর পাশে ফিরিঙ্গি বাজার ব্রিজঘাট এলাকায় ২৪ ফুট। এই এলাকাটি নিয়মিত ড্রেজিং করায় নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রয়েছে।

আরও পড়ুন: কর্ণফুলীর চরেই ৪৪ সরকারি অফিস হচ্ছে ১১০ একর জায়গার ওপর

এ জরিপ কাজ পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও রোড কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞ ড. স্বপন কুমার পালিত, কর্ণফুলী বিশেষজ্ঞ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী ও মেরিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নোমান আহমদ সিদ্দিকি।

সংবাদ সম্মেলনে কর্ণফুলী বিশেষজ্ঞ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী বলেন, ভাটার সময় বোঝা যায়, নদীর বাস্তব পরিস্থিতি কী। সময় থাকতে সচেতন না হলে ভবিষ্যতে আমাদের জন্য খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। নদীতে যে হারে পলি জমেছে এবং শহরের আবর্জনা পড়ছে তা রোধ করা না গেলে একসময় কর্ণফুলী মরা নদীতে পরিণত হবে।

টিবি/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!