‘ফেসবুকে তোলপাড়’ বিনা টাকার করোনার টিকা ‘হাজার টাকায়’ কিনছে হজযাত্রীরা

হজ যাত্রীদের বিনামূল্যের করোনা টিকা টাকার বিনিময়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠেছে এমন অভিযোগ। আর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন ভুক্তভোগী অনেকেই।

ফেসবুক সূত্রে জানা যায়, বিনামূল্যের ফাইজার টিকা বিক্রি করা হচ্ছে ২ হাজার টাকায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই টিকা আবার ৩ থেকে ৪ হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: করোনা : প্রতিবছর নিতে হবে টিকা!

এদিকে বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে এমএসএ মুন্না নামের একজন ভুক্তভোগী চমেক হাসপাতাল নিয়ে এমন একটি অভিযোগ তুলে ধরে চট্টগ্রামভিত্তিক একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দেন। সেখানে মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ভুক্তভোগী আরেকজন।

এমএসএ মুন্না ফেসবুক গ্রুপে লিখেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলে হজ যাত্রীদের দুটি টিকা মারা হচ্ছে। সেখানে কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের কাছে হাজীদের জন্য একটি টিকা বরাদ্দ আছে। আবার বলছে গত ৪দিন ধরে টিকার সংকট। তাই বাইরে থেকে আমার বাবা-মা’র জন্য দুটি টিকা ৯০০ টাকা করে ১৮০০ টাকায় ফার্মেসি থেকে কিনতে হয়েছে।

তিনি আরও লিখেন, এরকম শতশত হজ যাত্রীদের তারা টিকা কিনে আনার জন্য বাধ্য করছেন। পরে মেডিকেলের নিচের ফার্মেসিতে ১ হাজার টাকা থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের কি সত্যিই টিকার মজুদ নেই? নাকি টিকা ফার্মেসিতে দিয়ে ব্যবসা করছে? এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বাকি একটি টিকার সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও কেন হাজীদের বাইরে থেকে টিকা কিনে আনতে হবে? একই টিকা একটির মজুদ আছে আরেকটির নাই এটা কিরকম দুর্নীতি? নাকি এটাই নির্ধারিত নিয়ম?

এদিকে ফেসবুকে এমএসএ মুন্নার পোস্টের পর ভুক্তভোগী অনেকেই সেখানে মন্তব্য করে ক্ষোভ জানিয়েছেন।

মো. সাখাওয়াত তুষার নামে একজন লিখেন, আমি একবার গিয়েছিলাম চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ২০৪ নম্বর রুমে। সেখানে টিকার জন্য ২ হাজার টাকা চেয়েছিল। পরে বোয়ালখালী থেকে নিয়েছি ফ্রিতে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিস্ফোরণ—ফেসবুক লাইভে গিয়েই ‘স্পট ডেথ’ সেই তরুণ

ইমরান আহমেদ নামের আরেকজন লিখেন, একজনের কাছ থেকে প্রথমে ১ হাজার ৫০০ টাকা চেয়েছিল। পরে এক হাজার টাকায় চুক্তি হয়। আমার কথা হচ্ছে, বুস্টার ডোজ আমরাও নিয়েছি। প্রবাসী ভাইটাকে কেন টিকা নাই বলে এক হাজার টাকা দিয়ে টিকা নিতে হবে? সব জায়গায় ওরা কেন হয়রানির স্বীকার হবে?

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ফেসবুকে দেওয়া পোস্টটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এরপর আমি হাসপাতোলের সব স্টাফকে ডেকে মিটিং করেছি এবং সতর্ক করেছি। কয়েকজনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়েও দিয়েছি।আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হবে। হজ যাত্রীদের জন্য ফাইজার টিকা বিনামূল্যে দেয়া হবে এবং স্বাক্ষর নেওয়া হবে। টিকা নিতে এসে যেন কেউ দালালের খপ্পড়ে না পড়ে এই বিষয়ে সবাইকে মাইকিং করে জানানো হবে।

যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা আলোকিত চট্টগ্রামকে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এখানে বিনামূল্যে হজ যাত্রীদের করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ফার্মেসিতে টিকা বিক্রির বিষয়টি সঠিক নয়।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!