কর্ণফুলীর ৩ ইউনিয়নে কঠিন পরীক্ষায় আওয়ামী লীগ

কর্ণফুলীর পাঁচ ইউনিয়নের মধ্যে নির্বাচন হচ্ছে তিন ইউনিয়নে। এ তিন ইউনিয়নেই এবার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে ‘নতুন মুখ’ এনেছে আওয়ামী লীগ। তবে মাঠ ছাড়তে নারাজ আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে ইতোপূর্বে বিজয়ী হওয়া বর্তমান চেয়ারম্যানরাও। ‘নৌকা’ প্রতীক না পেলেও প্রার্থী হয়েছেন তাঁরাও। বর্তমান চেয়ারম্যানদের অনড় অবস্থানে ওই তিন ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগকে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

নির্বাচন ঘিরে তিন ইউনিয়নের অলিগলি ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টারে। কোনো প্রার্থী যাতে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারেন সেদিকে কড়া নজরদারি রয়েছে প্রশাসনের।

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। তবে ওই তিন ইউনিয়নের ভোটাররা বলছেন, এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের জয়ে বড় ফ্যাক্টর হবে ‘ক্লিন ইমেজ’।

আরও পড়ুন: আনোয়ারায় বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেও কঠোর হচ্ছে আওয়ামী লীগ

প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন কলেজশিক্ষার্থী সাবরিনা উম্মে শরীফ। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ইউপি সদস্য পদে অনেক তরুণ প্রার্থী হয়েছেন। তাদের চেয়ে এগিয়ে আছেন পুরনোরাই। প্রতীক নয়, যিনি ব্যক্তি হিসেবে ভালো তাকেই ভোট দেব।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কর্ণফুলী উপজেলায় মোট ভোটার ৯৩ হাজার ৯৮০ জন। এর মধ্যে শিকলবাহা ইউনিয়নে ৩১ হাজার ৬৭৪ জন, চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে ২১ হাজার ৫৮৭ জন এবং জুলধা ইউনিয়নে ১৩ হাজার ৩৭৯ জন।

বড়উঠান ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিদারুল আলম। এছাড়া মামলা জটিলতায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নে।

বাকি তিন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ প্রার্থী। তাঁরা হলেন- শিকলবাহায় আওয়ামী লীগ মনোনীত আবদুর করিম ফোরকান (নৌকা) ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম (আনারস), জুলধার আওয়ামী লীগ মনোনীত নুরুল হক (নৌকা), বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক আহমদ (আনারস) ও মু. মুসা (চশমা), চরলক্ষ্যায় আওয়ামী লীগ মনোনীত যুবলীগ সভাপতি সোলাইমান তালুকদার (নৌকা), বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী (চশমা), মো. ইব্রাহিম মিয়া (আনারস), এটিএম হানিফ (মোটরসাইকেল) ও নাসির আহমেদ (ঘোড়া)।

নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের পাশাপাশি সংরক্ষিত আসনে ৩৬ জন এবং সাধারণে ২০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বড় উঠানের সাধারণ সদস্য প্রার্থী সাজ্জাদ খান সুমন বলেন, গতবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নকাজ করেছি। এবারও সাধারণ মানুষের সমর্থন পাচ্ছি বেশি। আশা করছি, নতুন প্রজন্মের ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবে না।

শিকলবাহার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আবদুর করিম ফোরকান বলেন, ভোটাররা শিকলবাহার উন্নয়নের কথা চিন্তা করে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। আমি নির্বাচিত হলে শিকলবাহাকে আধুনিক মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করবো।

আরও পড়ুন: আনোয়ারায় চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আশরাফ

অপরদিকে জুলধার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক আহমদ বলেন, বিগত পাঁচ বছর আমি জুলধার ব্যাপক উন্নয়নসহ মানুষের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়িয়েছি। তাই বিশ্বাস করি জনগণ আমাকে আবার নির্বাচিত করবে।

জানতে চাইলে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এ পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটের মাঠে যেকোনো বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।

এদিকে কোনো প্রার্থী যাতে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারেন সেদিকে সার্বিক নজরদারি রাখছেন বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা।

আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!