বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে শুরু হয়েছে নানা গবেষণা। নতুন এ ভ্যারিয়েন্টটির আচরণ বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা কাজ করছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
করোনর নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে প্রথম সতর্ক ঘণ্টা বাজানো দক্ষিণ আফ্রিকার চিকিৎসক অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি বলেছেন, তার কাছে চিকিৎসা নেওয়া সন্দেহভাজন কয়েক ডজন ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর শরীরে কেবল মৃদু উপসর্গ দেখেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাড়াই তারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি গত ১৮ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের করানার নতুন ধরনের ব্যাপারে প্রথম সতর্ক করেন। ওই সময় তিনি ৩০ জন করোনা রোগীর মধ্যে সাতজনের শরীরে অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখতে পান। এটি করোনার অন্যান্য উপসর্গের চেয়ে ভিন্ন। তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে ক্লিনিক্যাল চিত্র তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: ‘ওমিক্রন’ ভয়ের মাঝেই চট্টগ্রামে হঠাৎ বাড়ল করোনা রোগী
বার্তাসংস্থা এএফপিকে অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি বলেন, গত ১০ দিনে তিনি অন্তত ৩০ জন রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন; যারা করোনা পজিটিভ ছিলেন। তাদের শরীরে তিনি কিছু ‘অপরিচিত উপসর্গ’ দেখতে পেয়েছেন। ওই রোগীদের ক্ষেত্রে তিনি যা দেখেছেন, সেটি হলো ‘চরম ক্লান্তি।’ তবে তরুণ রোগীর ক্ষেত্রে এই উপসর্গ ছিল একেবারে ‘অস্বাভাবিক।’ রোগীর বেশিরভাগই পুরুষ, যাদের বয়স ৪০ বছরের নিচে। তাদের অর্ধেকই করোনা টিকার পূর্ণ ডোজ নেওয়া ছিল।
অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি বলেন, তাদের পেশীতে মৃদু ব্যথা, গলায় খুসখুস ভাব এবং শুকনো কাশি ছিল। মাত্র অল্প কয়েকজনের শরীরের তাপমাত্রা সামান্য বেশি ছিল। তিনি বলেন, আমরা বলছি না যে, আগামীতে গুরুতর রোগ হবে না। তবে এখন পর্যন্ত আমরা যে রোগীদের দেখেছি; যাদের টিকা দেওয়া হয়নি, তাদেরও হালকা উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনে দেশটিতে যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের তিন-চতুর্থাংশেরই ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, হংকং, ইসরায়েলসহ বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামসহ দেশের সব বন্দরে ওমিক্রন নিয়ে সতর্কবার্তা
আফ্রিকা মহাদেশে করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটিতে দৈনিক কোভিড-১৯ পজিটিভের হার বুধবার পর্যন্ত ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হলেও শনিবার তা বেড়ে ৯ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছেছে।
এদিকে বাংলাদেশেও সতর্কবার্তা দিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে করোনার স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়েছে।