ইটভাটা শেষ করছে হালদার জীববৈচিত্র্য

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ইটভাটা। নদীর তীরে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটার কারণে মা মাছ ও জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ইটভাটার জন্য মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে হালদার বুকে জেগে ওঠা চর থেকে। আর মাটিগুলো নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হচ্ছে যান্ত্রিক নৌযান। হালদায় যান্ত্রিক নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইটভাটার মালিকরা তোয়াক্কা করছে না এসব। গত দুই বছরে যান্ত্রিক নৌযানের আঘাতে হালদা নদীর বিভিন্ন এলাকায় ৩৭টি ডলফিন মারা গেছে।

হালদা নদীর তীরে রাউজান উপজেলা অংশে কোতায়ালী ঘোনার পাশে, পশ্চিম বিনাজুরী, পশ্চিম গুজরার কাসেম নগর, উরকিরচরের পশ্চিম আবুরখীল, সার্কদা, নোয়াপাড়ার মোকামীপাড়া ও কচুখাইন এবং হাটহাজারী উপজেলা অংশে মেখলে ১০টি ইটভাটা গড়ে ওঠে। এরমধ্যে মোকামীপাড়া এলাকায় ‘এ আলী’ নামের একটি ইটভাটা গতবছর পরিবেশ অধিদপ্তর গুড়িয়ে দেয়। বাকিগুলোর ৭টি বন্ধ করা হলেও উরকিরচরের সার্কদা এলাকায় ‘মেসার্স আজমীর অটো ব্রিকস’ ও পশ্চিম আবুরখীল এলাকায় ‘শান্তি ব্রিকস’ নামে দুটি ইটভাটা এখনো চালু রয়েছে। কিছুদিন আগে যান্ত্রিক নৌযান ব্যবহারের দায়ে তাদের জরিমানাও করেছিলেন ইউএনও। এরপরও তারা হালদা নদীর চর থেকে মাটি উত্তোলন করেই চলেছে। ইটভাটার মালিকদের দাবি, তাদের বৈধ লাইসেন্স আছে।

আরও পড়ুন : হালদাপাড় থেকে মাটি তুলছিল দুই ইটভাটা, নৌযান জব্দের সঙ্গে গুনল জরিমানা

ইট কেনাবেচার জন্যও নদীপথে যান্ত্রিক নৌযান ব্যবহার করছে তারা। প্রতিদিন ক্রেতারা ইট কিনে নদী মপথেই নিয়ে যায়। আর বিক্রির জন্যও নদীপথ ব্যবহার করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ইট পৌঁছে দেয় ইটভাটার মালিকরা। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটছে হালদার জীববৈচিত্র্যের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উরকিচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুল জব্বার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার ইউনিয়নের মধ্যে হালদা নদীর তীরে দুটি ইটভাটা রয়েছে। এদের কারণে হালদা নদীর মা মাছের প্রজননে ক্ষতি হলে তা খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। আর যদি ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাহলে প্রশাসনের উচিত তাদের ব্যবসা করতে দেওয়া।

যোগাযোগ করা হলে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, হালদা নদী দিয়ে বিভিন্ন নৌযান দিয়ে মাটি পরিবহন করায় সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। নদীর পাড়ে কোনো ইটভাটা চলতে পারবে না। এসব ইটভাটা সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে চালানো হচ্ছে। অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!