আনোয়ারায় ৩৬ কেন্দ্র ‘ঝুঁকিপূর্ণ’—স্বতন্ত্রের দাবি শতভাগ

দরজায় কড়া নাড়ছে ইউপি নির্বাচন। আর মাত্র একদিন পর আগামী ৫ জানুয়ারি আনোয়ারার ১০ ইউনিয়নে হবে নির্বাচন। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় এখন উৎসবমুখর এই উপজেলা।

এদিকে আজ (৩ জানুয়ারি) ৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৬টিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে উপজেলা নির্বাচন কমিশন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবি ভিন্ন। তাঁরা বলছেন, ১০ ইউনিয়নের সবকটি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যে বরুমছড়া ও রায়পুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে ঘটেছে সংঘর্ষের ঘটনাও।

এদিকে নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থাকবেন ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট।

কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ইতোমধ্যে বিনাভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বৈরাগ ইউনিয়নের নোয়াব আলী, বারখাইন ইউনিয়নের হাসনাইন জলিল শাকিল এবং চাতরী ইউনিয়নের আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল।

আরও পড়ুন : বিদ্রোহীর পক্ষ নিয়ে আনোয়ারায় ‘নৌকা’ ডোবাতে চান আওয়ামী লীগ নেতারা!

অপরদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ৬ সপ্তাহের জন্য স্থগিত হয়েছে বটতলী ইউনিয়নের নির্বাচন। প্রার্থিতা নিয়ে জটিলতার কারণে রোববার ওই ইউনিয়নে নির্বাচন স্থগিত করেন উচ্চ আদালত। তবে ওই ইউনিয়নের সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাকি ৫ ইউপিতে আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ৯ আওয়ামী লীগ নেতা, স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪ নেতা এবং ইসলামী আন্দোলনের রয়েছেন ১ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের পাশাপাশি ৯০টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৫৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিটি ইউনিয়নে টাঙানো হয়েছে ফেস্টুন-ব্যানার। সঙ্গে রয়েছে পোস্টারও। তবে দেখা যায়নি বিএনপি প্রার্থীর পোস্টার।

এবার প্রথম ভোট দেবেন শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা সাকি। প্রতীক নয়, ব্যক্তি হিসেবে যে ভালো তাঁকেই জীবনের প্রথম ভোট দেবেন বলে জানান তিনি।

বারশতের ভোটার মো. সবুর বলেন, আমাদের বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। গতবারও গণ্ডগোল হয়েছে মেম্বারদের নির্বাচন নিয়ে। এবারও এমন আশঙ্কা আছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের নজরদারির আহ্বান জানাচ্ছি।

বরুমছড়ার সংরক্ষিত মহিলা প্রার্থী আমেনা বেগম বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। নির্বাচিত হলে এলাকায় উন্নয়নকাজ করব। সাধারণ মানুষের সমর্থন পাচ্ছি বেশি। আশা করছি নতুন প্রজন্মের ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন না।

বরুমছড়ার আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা সামশুর ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভোটাররা বরুমছড়ার উন্নয়নের কথা চিন্তা করে নৌকা প্রতীকে ভোট দেবে। আমি নির্বাচিত হলে বরুমছড়াকে একটি জবাবদিহিতামূলক আধুনিক মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করবো।

আরও পড়ুন : আলোকিত চট্টগ্রামে প্রতিবেদন, আওয়ামী লীগের অ্যাকশন—৭ বিদ্রোহী বহিষ্কার আনোয়ারায়

তবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগ আনেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ূম শাহ। এরপরও জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বিগত পাঁচ বছর বারশতে ব্যাপক উন্নয়নসহ মানুষের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়িয়েছি। তাই বিশ্বাস করি জনগণ আমাকে আবার নির্বাচিত করবে।

যোগাযোগ করা হলে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম দিদারুল ইসলাম সিকদার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যেভাবে নিরাপত্তা প্রয়োজন সেভাবেই কাজ করছে প্রশাসন। উপজেলার ৩৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। যেসব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ সেসব কেন্দ্রে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ও অতিরিক্ত নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ। তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থাকবেন ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট। আশা করছি সুন্দর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!