বহদ্দারহাটের ‘আতঙ্ক’ কায়সার হামিদ শেষমেশ ধরা খেল ছিনতাই মামলায়

অপরাধ করে আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকাটাই কায়সার হামিদের অহঙ্কার বলে ধরা হতো এতদিন। নানান অপরাধ করেও ঘুরে বেড়াত প্রকাশ্যে। কিন্তু এবার ছিনতাই ঘটনার একদিনের মাথায় বহাদ্দারহাটের ‘ত্রাস’ কায়সার হামিদকে গ্রেপ্তার করেছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে বহাদ্দারহাটের এক নারীর করা পাঁচলাইশ থানায় শ্লীলতাহানি ও ছিনতাই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাঁচলাইশ থানার সেকেন্ড অফিসার তালেবের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) একাধিক মামলার আসামি কায়সার হামিদকে বহদ্দারহাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. কামাল উদ্দিন আটকের বিষয়টি স্বীকার করে আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, কায়সার হামিদের বিরুদ্ধে গতকাল করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুন: যুবলীগ নেতা সেজে—সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড জিকুর, গুলি ছুড়েন ‘শোকের অনুষ্ঠানেও’

যোগাযোগ করা হলে কায়সার হামিদের হামলার শিকার ও মামলার বাদি মুন্নি আকতার বলেন, কায়সার ও তার নেতৃত্বে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী জোর করে আমাকে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে। এ সময় আমার মা বাঁচানোর চেষ্টা করলে কায়সার ছুরি দিয়ে তার ডান হাতের আঙ্গুল রক্তাক্ত করে। আমার গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে নিয়ে যায় কায়সার।

ঘটনার দিন রাতেই মুন্নি আকতার বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় কায়সার হামিদকে প্রধান আসামি করে মো. সাব্বির, মো. জসিম, নাছির, নাজিম, মহিনসহ ৬ জনের নামে মামলা করেন।

এদিকে মামলার আরেক আসামি জসিম চকবাজারের ত্রাস টিনুর অন্যতম সহযোগী। ২০১৯ সালে একটি পিস্তল, একটি শটগান ও ৬৭ রাউন্ডগুলিসহ র‌্যাবের হাতে আটক হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী নূর মোস্তফা টিনু ও জসিম।

এছাড়া প্রধান আসামি কায়সার হামিদও নূর মোস্তফা টিনুর ‘কাছের মানুষ’ হিসেবে পরিচিত। টিনুর নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর মধ্যে বহাদ্দারহাট এলাকার দেখাশোনা করে কায়সার হামিদ। ফুটপাতে চাঁদাবাজি, জমি দখল, অবৈধ ব্যবসার দেখভালসহ কিশোর গ্যাং পরিচালনার অভিযোগও আছে কায়সারের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন: রাতেই রক্ত ঝরল ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বে, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে নাহিদ—কায়সার গ্রুপ

এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর বহাদ্দারহাট এলাকার কালরপুলে মধ্যরাতে পরকীয়ার ঘটনায় কায়সারের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালায়। এ সময় সশস্ত্র গ্রুপ পাঁচলাইশ থানার কালারপুর হাজী চান মিয়া রোডে খাজা গরীবে নেওয়াজ ভবনে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে তুলে আনতে গেলে সংঘাত শুরু হয়। ওই নারীর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে থাকায় কায়সারের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। কায়সারের বিরুদ্ধে সিএমপির বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সিএম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!