আজ শুধু জ্ঞানের আরাধনা

জ্ঞান, বিদ্যা ও ললিতকলার দেবী শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা আজ (৫ ফেব্রুয়ারি)। এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা আয়োজিত হয় এবং শ্রী পঞ্চমীর দিন সকালে সরস্বতী পূজা সম্পন্ন করা হয়। তিথিটি শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত।

শুক্রবার (৪ ফেব্রয়ারি) সন্ধ্যায় দেবী সরস্বতীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস সম্পন্ন হয়েছে।

বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, আজ শনিবার সকাল ৭টা ৩৬ মিনিটের পর পঞ্চমী আরম্ভ হয়ে পরদিন রোববার ৭টা ৩৮ মিনিট পরে পঞ্চমী তিথি শেষ হবে। পূজা শেষে ভক্তদের দেওয়া হবে অঞ্জলি, বিতরণ করা হয় প্রসাদ। বিভিন্ন পূজামণ্ডপে আজ রয়েছে দিনব্যাপী নানা আয়োজন।

আরও পড়ুন: শক্তির পূজায় প্রতিবাদ—প্রতিমা নেই, কালো কাপড়ে ঢাকল মণ্ডপ

স্বরসতী মূলত বৈদিক দেবী। বেদে কিন্তু সরস্বতী প্রধান নদীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী। সরস শব্দের অর্থ জল। সরস্বতী শব্দটির বুৎপত্তিগত অর্থে সরস(জল)+মতুন+ঙীন(স্ত্রী)। অতএব সরস্বতী শব্দের আদি অর্থ হলো জলবতী অর্থাৎ নদী।

দেবী সরস্বতী জ্ঞানদায়িনী, সর্বশুক্লা, তিনি বাগদেবী ও নিষ্কলা, নিত্যশুদ্ধা, তিনি প্রশহমশ বুদ্ধিদায়িনী ও মোক্ষদাত্রী। সরস্বতী জ্ঞান বিদ্যা ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী হিসেবে পূজিত হয়ে আসছে আদিকাল থেকে।

ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে সরস্বতী পূজা এক অন্যরকম আবেদন সৃষ্টি করে। নগরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর মঠ, মন্দির, ও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অলি গলিসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি বাড়ি আয়োজন করা হয় সরস্বতী পূজা।

আজকের দিনটি অত্যন্ত শুভ। তাই এই দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণের প্রথাও প্রচলিত রয়েছে।

লোকাচার অনুসারে ছাত্র-ছাত্রীরা সরস্বতী পূজার আগে কুল খেতে পারে না। পূজার দিন কিছু লেখা নিষিদ্ধ। পূজার পরের দিনটি শীতলষষ্ঠী নামে পরিচিত।

জ্ঞান ও বিদ্যার প্রতীক হিসেবে সরস্বতী দেবীর বর্ণনা রয়েছে পুরাণে, বেদে, আরণ্যকে, সংস্কৃত সাহিত্যে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অন্যান্য মহাকবিরা সরস্বতী দেবীর বন্দনা করেছেন জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্পকলা, ললিতকলা, সঙ্গীত, নন্দনতত্ত্ব তথা সকল বিদ্যার প্রতীকরূপে। তাই তিনি শ্রুতি ও শাস্ত্রের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, কবিকূলের আরাধ্য দেবী।

আরও পড়ুন: দুর্গাপূজায় বাধা, হিন্দুদের হাজারো লোক ঘেরাও করল কৈবল্যধাম মন্দির

সরস্বতী দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তিতে নেই কোনো মারণাস্ত্র, হিংস্রতার লক্ষণ ও কোনো পশুশক্তির প্রতীক। রয়েছে শ্বেত-শুভ্র বসন, জ্ঞানে মসি ও পুহমশক। হাতে শান্তির ললিতবীণার বীণাযন্ত্র, আছে চির প্রবহমান ফল্গুধারা নদী, রয়েছে শ্বেত হংসবাহন।

এদিকে সরকারি বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপন ও ভক্তদের পূজামণ্ডপে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল।

আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!