‘অভিনব ছিনতাই’ টার্গেট যানজটের স্থির ট্রাক, এবার বন্দর পুলিশ ধরল চক্রের ৩ সদস্যকে

রাজধানীর তেজগাঁও বিআরটিসি ট্রাক ডিপোর গাড়িচালক মো. জাকির হোসেন। ফ্রি পোর্টে কাঁচামালের গোডাউনের আলু আনলোড করে তিনি সার লোড করতে রওয়ানা হন আনোয়ারা কাফকো ফ্যাক্টরির উদ্দেশ্যে। এসময় সল্টগোলা ক্রসিং আজাদ কলোনির সামনে এলে যানজটের কারণে গাড়ি ধীরে চলছিল। এ সময় অজ্ঞাত তিন যুবক গাড়ির পেছনের চাকায় রড ঢুকেছে বলে জানায় জাকিরকে।

তাদের কথা শুনে চালক জাকির গাড়ির দরজা খুলতেই তিন যুবকের দুজন চালকের দুপাশে এবং একজন হাঁটুর ওপর বসে পড়ে। একপর্যায়ে তারা ছুরি ধরে ভয় দেখিয়ে চালকের মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। একইসঙ্গে চালকের সাড়ে ২৩ হাজার নগদ টাকা, দুটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্সসসহ কাগজপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।

গত শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরের বন্দর সল্টগোলা ক্রসিং আজাদ কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী চালক জাকির হোসেন মামলা করলে ৬ ঘণ্টার মধ্যে চক্রের দুই সহোদরসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে বন্দর থানা পুলিশ।

আরও পড়ুন : ছিনতাইয়ের সময় ফেলে যাওয়া ফোনে ধরা খেল ৪ ছিনতাইকারী

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলো- ভোলা সদর সাহেবের চর ভেলু মিয়া বাজার মালেগো বাড়ীর নুর মোহাম্মদ বেপারির ছেলে মো. হাসেম (২৮) ও তার ছোট ভাই মো. জসিম (২৫)। তারা বন্দর থানাধীন ২ নম্বর মাইলের মাথা সৈয়দ আহাম্মদের ভাড়া ঘরের চতুর্থ তলার বাসায় বসবাস করেন।

অপর আসামি বরিশাল মেহেন্দীগঞ্জ পাতারহাট দুর্গাপুর সিকদার বাড়ির জসিম সিকদারের ছেলে মো. রুবেল (৩৩)। সে বর্তমানে বন্দর থানার সল্টগোলা ক্রসিং আজাদ কলোনি রমজান আলীর ভাড়াঘরে বসবাস করে।

এ বিষয়ে বন্দর থানার এসআই কিশোর মজুমদার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মামলার পর আসামি শনাক্ত করে ৬ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, আসামিদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, জাকির হোসেনের জাতীয় পরিচয়পত্র, দুটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড, ড্রাইভিং লাইলেন্স কার্ড, একটি স্টিলের টিপ ছোরা ও নগদ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই চোরচক্রের সদস্যরা বেশিরভাগ সময় কারাগারে থাকে। কারাগার থেকে বেরিয়ে আবারও সেই পুরনো পেশায় জড়িয়ে পড়ে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের বন্দর এলাকায় প্রায় প্রতিদিন এমন ঘটনা ঘটছে। এসব চক্রে কারণে যানজটে আটকে থাকা গাড়ি থেকে মালামাল চুরি হয়।

সল্টগোলা ক্রসিং মোড় এলাকার এক পান দোকানি নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বন্দর বা অন্যান্য দিক থেকে আসা গাড়িগুলোকে টার্গেট করে এই চোর চক্র। যানজটে গাড়ি একটু ধীরগতিতে চলার সময় চক্রের দুজন ট্রাকে উঠে পড়ে। বাকি ৪ থেকে ৫ জন সদস্য নিচে থাকে। গাড়িতে উঠা সদস্যরা মালামাল লুট করে নিচে নামিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা আসামি শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ (শনিবার) গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!