৬ কোটি থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার কোম্পানি হওয়ার গল্প শোনালেন বেলাল

বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পেয়েছে গোল্ডেন সন লিমিটেড

৬ কোটি টাকা থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার কোম্পানি গড়ে তোলার গল্প শোনালেন গোল্ডেন সন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল আহমেদ।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির ২০তম বার্ষিক সাধারণ সভায় গোল্ডেন সনের সাফল্যের গল্প শোনান কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল আহমেদ।

বেলাল আহমেদ বলেন, আমি ৬ কোটি টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। আজ এটি ১৫০০ কোটিতে পৌঁছেছে। এই প্রতিষ্ঠান আমার সন্তানের মতো।

তিনি বলেন, গড়ে প্রতিদিন আমরা ১৫ হাজার বৈদ্যুতিক মোটর তৈরি করি। আগামীতে এটি ৫০ হাজারে উন্নীত করা হবে।

ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি, প্রতিকূলতাকে জয় করেছি; এমন মন্তব্য করে বেলাল আহমেদ ঘোষণা দেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে গোল্ডেন সনকে দেশের আইকনিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করবো।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার ফ্যাক্টরি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কোম্পানির চেয়ারম্যান লিন ইউ-চেন। সভাটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন আইসিবি মনোনীত পরিচালক মো. আল আমিন তালুকদার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালক মো. আব্দুর রউফ ও মো. বাইতুল আমিন ভূঁইয়া।

গোল্ডেন সনের সাফল্যের গল্প শোনাতে গিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল আহমেদ বলেন, একটি ছোট উদ্যোগ থেকে বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিকশিত হয়েছে গোল্ডেন সন। কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি। করোনা মহামারির কঠিন সময়েও থেমে যাইনি। আজ এই প্রতিষ্ঠান নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, গোল্ডেন সনের কারখানা বিদেশে টাকা পাচার নয়, বরং স্থানীয় উন্নয়নে কাজ করছে। আমাদের কারখানার পরিবেশ সুরক্ষিত। আমরা ফ্যাশন শো করি না; কাজের জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি।

বার্ষিক সভায় চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

জানা গেছে, শেয়ারপ্রতি লোকসান আগের বছরের ১১ পয়সা থেকে কমে ৭ পয়সা। শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ১৭ টাকা ৯২ পয়সা। শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ ৬৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ৩৬ পয়সা ঘাটতি ছিল।

২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে শেয়ারহোল্ডারদের দেড় শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় গোল্ডেন সন লিমিটেড। বর্তমানে লেনদেন করছে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে। কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৭১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, যেখানে মোট শেয়ারের ৩০.২৯ শতাংশ উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের। ২৩.০৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এবং ৪৬.৬৭ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

এদিকে শেয়ারহোল্ডার মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, গোল্ডেন সনের সফলতা আমাদের জন্য গর্বের। আমরা বিশ্বাস করি, কোম্পানিটি আরও উঁচুতে উঠবে।

কোম্পানির সেক্রেটারি মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদের সার্বিক সহযোগিতায় বার্ষিক সভায় বক্তব্য রাখেন শেয়ারহোল্ডার আব্দুল ওহাব, এজিএম নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সেলিম মিয়া, মো. আলমগীর হোসেন, ফারুক হোসেন, হিরা লাল বনিক, মোকাম্মেল হক খান এবং কবির আহমেদ চৌধুরী।

এতে জেসমিন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস চার্টার্ড সেক্রেটারির পক্ষে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহেদ।

এর আগে সভার শুরুতে কারখানার সহযোদ্ধা মুজিবুর রহমান কুরআন তেলাওয়াত করেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গৃহস্থালির ইলেকট্রনিক্স, টুইল টেপ, হট পট, খেলনাসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি রয়েছে গোল্ডেন সনের। এখন নেওয়া হয়েছে নতুন প্রকল্প। যার মধ্যে রয়েছে সৌরশক্তি প্রকল্প এবং কম্পিউটার কেসিং উৎপাদন প্রকল্প।

তারা আরও বলেন, গোল্ডেন সনের আজকের অবস্থান অনুপ্রেরণার গল্প। এমডি বেলাল আহমেদের দক্ষ নেতৃত্ব ও দূরদৃষ্টি প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ে যাচ্ছে সফলতার শীর্ষে।

জেজে/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm