৩৬ কোটি টাকার সৌন্দর্যবর্ধন, যেভাবে আছে পর্যটন শহরের ঐতিহ্যবাহী ৩ পুকুর

পর্যটন শহর কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী তিন পুকুর গোলদীঘি, লালদীঘি ও নাপিতের পুকুর। ঐতিহ্যবাহী এই তিন পুকুর ঘিরে হয় ৩৬ কোটি টাকার সৌন্দর্যবর্ধন। কিন্তু তিন পুকুরেরই এখন ত্রাহি দশা।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে সরেজমিন গঐতিহ্যবাহী নাপিতা পুকুরে গিয়ে দেখা যায়, কোটি টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য তৈরি করা পুকুর যেন ছাগলের চারণভূমি। পুকুরের চারপাশে চলাচলের রাস্তায় জমেছে আবর্জনার স্তূপ।

অভিন্ন চিত্র লালদীঘি ও গোলদীঘি পুকুরেরও। ঐতিহ্যবাহী এই পুকুরগুলো এখন চরম অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় পড়ে আছে। গরমে শুকিয়ে গেছে পানি। গোলদীঘিতে গানের সঙ্গে কৃত্রিম ঝরনার প্রদর্শনীও বন্ধ। চুরি হয়ে গেছে লাইটসহ মূল্যবান জিনিসপাতি।

এদিকে তিন পুকুরের এমন বেহাল দশার জন্য স্থানীয়রা দুষছেন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয় বাসিন্দা সাইদ স্বাধীন বলেন, কোনো প্রকার তদারকি এবং রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় পুকুরগুলোর এমন বেহলা অবস্থা।

আরও পড়ুন : পুলিশ দেখে পুকুরে ঝাঁপ দিলেন ইউপি সদস্য!

গোলদীঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা আসিফ বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের জন্য একটি অভিনব পর্যটন স্পট হতে পারতো এসব জলাধার। এগুলোকে তৈরি করাও হয়েছিল বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে। তবে মাত্র কয়েক বছরেই পুকুরগুলোতে রাতে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়।

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা জাহেদুল হক বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইট নেই। যা ছিল তার মধ্যে অনেক লাইট চুরি হয়ে যাওয়ার কারণে পর্যটক তো দূরের কথা স্থানীয়রাও পুকুরপাড়ে বসতে ভয় পায়। পুকুরগুলোর চারপাশ ময়লা-আবর্জনায় একাকার।

জানা যায়, কক্সবাজার শহরকে পরিকল্পিত পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে লালদীঘি,  গোলদীঘি ও নাপিতা পুকুরকে কেন্দ্র করে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কক্সবাজারে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)। যা ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে উদ্বোধন করা হয়। এরপর দুবছর ঠিকঠাক তদারকি চলে।

২০২২ সালের আগস্টে কউক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত কমোডর নুরুল আবছার। এরপর থেকে অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে যায় গোলদীঘির ওয়াটার লাইট শোসহ তিন পুকুরের বিশেষ তদারকি।

এদিকে গত ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর কউক এসব পুকুর কক্সবাজার পৌরসভাকে হস্তান্তর করে। তারপর পুকুরগুলোর তদারকি ব্যবস্থা আরো নাজুক হতে থাকে।

তবে পৌর কর্তৃপক্ষের বলছে, ৫ আগস্টে বিভিন্ন স্থাপনার মতো পুকুরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মূল্যবান অনেক কিছুই চুরি হয়ে গেছে।

পুকুরগুলোর জন্য প্রকৌশলী নিয়োগের কথা জানিয়ে কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী পরাক্রম চাকমা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার পর পুকুরগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রকৌশলী নিয়োগ করা হয়েছে। দ্রুত পুকুরগুলোর সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।

নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন,  পুকুরগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির জন্য কিছু আনসার কর্মীও নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতি পুকুরের জন্য ৪ জন করে আনসার বাহিনীর একটি দল গঠন করা হয়েছে। সব সমস্যার সমাধান ও পৌরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে পৌর কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর বলে জানান তিনি।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm