৩৩ বছর পর একত্রিত হয়েছেন বন্ধুরা। কেউ জড়িয়ে ধরছেন একে অপরকে। আবার কেউ পুরনো বন্ধুকে পেয়ে মেললেন স্মৃতির ডালি।
এমনই এক উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো শুচিয়া রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ’৯১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) স্কুল প্রাঙ্গনে দিনব্যাপী এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিব হোসেন। তিনি বলেন, শুচিয়া রামকৃষ্ণ স্কুলের দীর্ঘ একটা ইতিহাস রয়েছে। এই স্কুলের বহু ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন সময়য়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাধমে দেশ গঠনে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষকদের স্কুলটির ১৯৯১ ব্যাচ যে সম্মান দিয়েছে তা আমাকে অভিভূত করেছে।
তিনি আরও বলেন, তখনকার শিক্ষকরা কঠোর শাসনের মাধ্যমে শিক্ষা দিতেন, স্নেহও করতেন। তাই আজ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে পৃত্রিতুল্য শিক্ষকদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি। এটা আমার জন্য সম্মানের, সৌভাগ্যের। সময় পাল্টেছে, ছাত্র-শিক্ষকদের আচরণও পাল্টেছে। তখনকার শিক্ষা ও আজকের শিক্ষার মধ্যে তফাৎ অনেক।
এর আগে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের প্রাক্তন উপপরিচালক দেবব্রত দাশ।
৯১-এর প্রাক্তন ছাত্র মো. আহছান উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব সুজন দেব।
যুগ্ম সদস্য সচিব রাজেশ চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দিলীপ ভট্টাচার্য্য, তৃষিত চৌধুরী, কিশোর চৌধুরী ও প্রভাকর বড়ুয়া।
এর আগে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত। এরপর স্কুলের প্রয়াত শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও ’৯১ বন্ধুদের স্মরণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সন্মাননা দেওয়া হয় স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক করুণাময় দাশ ও রতন চক্রবর্তী, বর্তমান প্রধান শিক্ষক টিক্লু দাশগুপ্ত, সাবেক সিনিয়র শিক্ষক সবিতা সিকদার, দিবাকর বড়ুয়া ও সলিল চক্রবর্তীকে।
এছাড়া মরোণত্তর সম্মাননা দেওয়া হয় সাবেক প্রধান শিক্ষক দিলীপ কান্তি মজুমদার, সিনিয়র শিক্ষক সুকুমার বড়ুয়া, শান্তিপদ দাশ, অজিত কুমার বড়ুয়া, তপন কান্তি চৌধুরী, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও রত্না প্রভা বড়ুয়াকে। তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। পরে স্কুলের বর্তমান শিক্ষকদের সম্মাননা দেওয়া হয়।
মিলনমেলায় আসা ’৯১ প্রাক্তন বন্ধুদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গৌতম ভট্টচার্য্য, নেপাল শীল, লিপি দেব, সিরাজুল হক, বিজন দে, ত্রিদিব দেব, করবী দাশ, প্রবীর চৌধুরী, লিটন পাল, সজল ভট্টাচার্য্য, সময় ভট্টাচার্য্য, বিথী বড়ুয়া, শম্পা দাশ, নূপুর বড়ুয়া, উত্তম চৌধুরী, দিপক হোড়, শিমলা বিশ্বাস, ইতি তালুকদার, ঝর্ণা দেব, আলমগীর আলম, ভবতোষ চৌধুরী, অনুপ বড়ুয়া, মিল্টন চৌধুরী, পূর্ণিমা আচার্য্য, প্রণতি চৌধুরী, শিব নারায়ণ চক্রবর্তী, সুবল দে, মহিউদ্দীন চৌধুরী, দিলীপ হোড়, তরুণ চৌধুরী, চম্পা দেব, মিন্টু আচার্য্য, রাম প্রসাদ দেব, প্রিয়তোষ বড়ুয়া, জিতেন বিশ্বাস, পুষ্পেন বড়ুয়া, নিতিশ বড়ুয়া, দয়াল দাশ, পূর্ণিমা সামন্ত, সুবল দে, ভবতোষ চৌধুরী, প্রিয়তোষ বড়ুয়া ও শিল্পী ভট্টাচার্য্য।
দিনব্যাপী অন্যান্য আয়োজনে ছিল আড্ডা, আলাপচারিতা, শিক্ষাগুরু ও পুরোনো বন্ধুদের নিয়ে ফটোসেশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ এবং র্যাফেল ড্র।
আলোকিত চট্টগ্রাম