আনোয়ারায় তিন ভাইয়ের কারণে কষ্ট পাচ্ছে ২৮ পরিবার। ওই ভাইয়েরা কাঁটাতারের বেড়া বসিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে ৩০০ বছরের পুরনো একটি রাস্তা! আবার এ নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে দেখান জজ সাহেবের ‘জুজু’।
জানা যায়, আনোয়ারার গুজরায় ৩০০ বছরের পুরনো এই রাস্তাটি হলো মুখেলেছুর রহমান বাড়ির। মুখেলেছুর রহমান বাড়ির রাস্তা হিসেবেই চলাচল করে আসছে ২৮ পরিবার। কিন্তু বছর ধরে এক পরিবার এই রাস্তা দিয়ে চলাচলে বাধা দিচ্ছে।
মূলত কালা মিয়া মুন্সি বাড়ির তিন ভাই চলাচলে বাধা দিচ্ছে। কেউ যাতে রাস্তাটি দিয়ে হাঁটতে না পারে সেজন্য তারা দিয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। মুমূর্ষু রোগী, ডেলিভারি রোগী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ লাশবাহী গাড়ীও আটকে দেওয়া হচ্ছে কাঁটাতার দিয়ে।
স্থানীয় লোকজন জানান, মরহুম নুরুল আবছার খাঁনের ৩ ছেলে জাহাঙ্গীর আলম খাঁন , তারেক রহমান খাঁন ও মকসুদ রহমান খাঁন মিলে রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছেন। এই রাস্তা ব্যবহার করতে হলে তারা বিশাল অঙ্কের টাকা দাবি করছেন।
মুখেলেছুর রহমান বাড়ির ভুক্তভোগী প্রবাসী সৈয়দ নুর জানান, কাঁটাতার দিয়ে দখল করে রাখা রাস্তা নিয়ে আমরা ভুক্তভোগীরা কথা বললে ওরা তিন ভাই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এমনকি আমার পরিবারের লোকজনকে মেরে গুম করার হুমকিও দিয়েছেন।
এদিকে গত ১১ এপ্রিল কাঁটাতার দিয়ে রাস্তায় প্র্তিবন্ধকতা ঘটনার সত্যতা দেখতে সরেজমিন ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক। এ সময় দখলবাজরা শোর-চিৎকার শুরু করে দেন। এর মধ্যে একজন ‘জজ সাহেবকে ফোন করছি, ঠেলা বুঝাবে’ বলে সাংবাদিকদের ভয়ও দেখান।
আরও পড়ুন: ধরে ধরে হাঁটাতে হয় অভিনেত্রী আনোয়ারাকে, চিনতে পারছেন না কাউকে
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালা মিয়া মুন্সি বাড়ির একজন জজ সাহেেব আছেন। এই রাস্তা দখল থেকে থেকে শুরু করে বিভিন্ন জটিলতায় মরহুম নুরুল আবছার খানের পরিবার জজ সাহেবের ‘জুজু’ দেখান। জজ সাহেবের ক্ষমতার হুমকি-ধমকি দিয়ে তারা এলাকার লোকজনকে জিম্মি করে রেখেছেন।
এদিকে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা দিলেন ভিন্ন তথ্য। তারা জানান, জজ সাহেব অত্যন্ত ভালো লোক। ওনি কখনো কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না। জজ সাহেবের অগোচরেই ওনার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আনোয়ারা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, এত বছরের পুরনো একটি রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা কোনোভাবে কাম্য নয়। এটা অন্যায়। মানুষ চলাচলের রাস্তা, পানি চলাচলের রাস্তা- এসব কখনো আটকে রাখা যায় না। তাছাড়া রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের তালিকাভুক্ত।
যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় মেম্বার ইউনুস আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, কাঁটাতারের বেষ্টনী দিয়ে রাস্তাটি ঘিরেছে বলে শুনেছি। এতে চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি, তবে মৌখিকভাবে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। আমি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি।