‘হঠাৎ কোটিপতি’—স্বর্ণ ব্যবসায়ী, আড়ালে চোরাই স্বর্ণ বাণিজ্যের ফাঁদ

চেহারায় সততার ছাপ। কথা বললে মনে হবে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ। ব্যবসা করেন স্বর্ণের। কিন্তু আড়ালে রয়েছে চোরচক্রের সঙ্গে বিশেষ সখ্যতা। চুরি করা স্বর্ণ বেচাকেনায় তাঁর পেশা এবং নেশা। এভাবেই একলাফে ধনী হয়ে উঠেন উত্তম।

উত্তম দে, বাবার নাম বাবলু দে। বাড়ি উত্তর চট্টগ্রামে রাউজানের দক্ষিণ দেওয়ানপুরে। সেখানে অক্ষয় দে’র বাড়িতেই তার জন্ম। মাত্র ৩৮ বছর বয়সের এই যুবক স্বর্ণের দোকানের আড়ালে একাধিক চোরচক্রের সঙ্গে গড়ে তোলেন গভীর সখ্যতা।

কর্ণফুলী থানার ইছানগরের বিএফডিসির গেটের সামনেই লায়লা টাওয়ার—হাজী বশর মার্কেটে রয়েছে উত্তমের স্বর্ণের ব্যবসা। এখানে একটি ছোট্ট দোকান থাকলেও মূলত চোরাই স্বর্ণ বেচাকেনাই তাঁর মূল ব্যবসা।

আরও পড়ুন: ‘স্বর্ণ ব্যবসা’—ঋণের যন্ত্রণায় গলায় দড়ি, দায় সারল মৃত্যুতেই

এলাকার মানুষের কাছে উত্তম পরিচিত সরল জীবনযাপনের এক সাধারণ মানুষ। লায়লা ভবনের ওপরেই তাঁর বাসা। যেখানে থাকেন তার মা, বাবা, বৌ। তারা কখনোই বুঝতে পারেননি, স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে উত্তমের সঙ্গে চোরচক্রের বিশেষ সখ্যতার কথা। স্বর্ণ ব্যবসার নামে চড়া সুদেও বেশ টাকা লগ্নি করতেন উত্তম। এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে আলোকিত চট্টগ্রামের অনুসন্ধানে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চোরাই স্বর্ণ বেচাকেনা করতে কর্ণফুলী এলাকার অনেক মাছ ব্যবসায়ী থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন উত্তম। বিশাল অঙ্কের টাকা নিয়েছেন স্থানীয় আরও ২০-৩০ জন ব্যবসায়ীর থেকেও। উত্তম পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর থেকে অস্থিরতা সময় পার করছেন এসব বিনিয়োগকারী। ছেলের এমন বাণিজ্যের কথা শুনে উত্তমের বয়স্ক বাবার দীর্ঘদিনের অসুস্থতাও বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। হতাশ হয়ে পড়েছেন পরিবারের অন্য সদস্যরাও।

এর আগে দুর্ধর্ষ চোর বাবুলকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। পাঁচ বছরে অন্তত ৩৫০ চুরির মূল হোতা এই বাবুল। তার স্বীকারোক্তিতেই বেরিয়ে আসে উত্তমের নাম। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাবুলের চুরি করা স্বর্ণ কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতেন উত্তম।

আরও পড়ুন: ‘পাচার’—৪৭০ ভরি স্বর্ণ ছিল বুড়োর কাছে, ধরল বিজিবি

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নেজাম উদ্দীন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গ্রেপ্তার উত্তম দে একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বাবুলের সঙ্গে রয়েছে তাঁর গভীর সখ্যতা। চোরাই স্বর্ণ কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করেন তিনি। চোরাই স্বর্ণ বেচাকেনায় উত্তমের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!