সুনসান কামারপল্লীতে এখন টুং টাং
সকাল ৯টা, নগরের নিউ মনসুরাবাদ এলাকা। অদূরেই ‘ভাই ভাই নবারুন কর্মকার’-এর দোকান। সামান্য এগোতেই কানে এলো দা, ছুরি, বটি তৈরির টুং টাং শব্দ। অথচ কয়েকদিন আগেও এই দোকানটি ছিল সুনসান। ছিল না কোনো কর্মব্যস্ততা।
দাঁড়াতেই চোখে পড়ল দা, ছুরি তৈরিতে ব্যস্ত কামারেরা। কেউ তৈরি করা জিনিসে তেল ও শান দিচ্ছেন, কেউ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি ও অগ্রিম অর্ডারের রশিদ কাটছেন। আবার কেউ তৈরি করা জিনিস সাজিয়ে রাখছেন। এর মধ্যে অনেক ক্রেতা আসছেন, দেখছেন, দরদামও করছেন।
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কামারেরা। নগরের বিভিন্ন কামারপল্লী এখন সরগরম হয়ে উঠেছে। এ সময়ে যেন দম ফেলার ফুসরত নেই কামারদের। অথচ লকডাউন ও কঠোর বিধিনিষেধের কারণে এসব দোকান ও কামারপল্লী কয়েকদিন আগেও ছিল সুনসান।
নগরের চকবাজার, বহদ্দারহাট, জেলরোড মুরাদপুর, কোতোয়ালি, এলাকার বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরেও দেখা যায়, কামারদের ব্যস্ত সময় কাটাতে।
কয়েকজন কামার জানান, মানভেদে নতুন দা ২৮০ থেকে ৪শ-৫শ টাকা, ছুরি ১৩০ থেকে ২শ টাকা, বটি ৩৫০ থেকে ৬শ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩৫০ থেকে ৫শ টাকা এবং ধামা ৪শ থেকে হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দা শাণ করাতে ৬০ টাকা, ছুরি ৪০ টাকা, বটি ৬০ টাকা। ভাই ভাই নবারুন কর্মকার দোকানের মালিক দু’ভাই অজিত কর্মকার ও রাজিব কর্মকার।
রাজিব কর্মকার জানান, করোনা ও লকডাউনের কারণে আগের মতো তেমন অর্ডার কিংবা বিক্রি নেই। মোটামুটি যা পেয়েছেন নির্দিষ্ট সময়ে অর্ডার ডেলিভারি লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অজিত জানান, পূর্বপুরুষদের হাত ধরে এই পেশায় এসেছেন। বর্তমানে মহামারী করোনার কারণে কামারশিল্পীরা ভালো নেই। তারপরও বাপ-দাদার পেশা টিকিয়ে রেখেছেন অনেকে। টিকে থাকতে না পেরে অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।’
আরবি