চট্টগ্রামে সি-ওয়ার্ল্ডে গিয়ে আঙুল হারাল কিশোর, কাঠগড়ায় কনকর্ড

চট্টগ্রামের বিনোদনকেন্দ্র কনকর্ড সি ওয়ার্ল্ডের স্লাইডিং রাইড চড়তে গিয়ে ভাঙা অংশে এক কিশোর হাতের আঙ্গুল হারিয়েছে। এ ঘটনায় কনকর্ডের চেয়ারম্যান, এমডিসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে চট্টগ্রাম আদালতে।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে মামলাটি করা হয়। মামলাটি করেন ভুক্তভোগী ওই কিশোরের মা সখিনা বেগম।

এদিকে আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অথবা সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- রাজধানীর গুলশান থানার কনকর্ড সেন্টারের ফয়’স লেক কনকর্ডের চেয়ারম্যান এসএম কামাল উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার কামাল ও মো. সাজ্জাদ এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে পর্যটনকেন্দ্রে ঈদানন্দ, পতেঙ্গায় জনস্রোত—সি ওয়ার্ল্ডে বিশেষ অফার

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী সুলতান মোহাম্মদ অহিদ। তিনি বলেন, বিচারক প্রায় আধঘণ্টা সময় নিয়ে এ মামলার এজাহার পর্যালোচনা করেন। তবে আমরা চেয়েছি আসামিদের সমন দেওয়া হোক। কিন্তু আদালত এজাহারে সন্তুষ্ট হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে ভুক্তভোগী কিশোর সাজ্জাদ হোসেন জয় (১৪) তার মামতো ভাই মো. মিয়াদ এবং খালাতো ভাই জিবরানের সঙ্গে কনকর্ড সি ওয়ার্ল্ডে বেড়াতে যায়। এসময় স্লাইডিং রাইড চড়ার সময় স্লাইডারের মাঝামাঝি ভাঙা ধারালো অংশে সাজ্জাদের ডান হাতের বৃদ্ধা আঙুল কেটে হাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন আঙুলটি স্লাইডারের ভাঙা অংশে ঝুলে থাকে। এসময় বিনোদনকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ নিজেদের অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বাহানায় কালক্ষেপণ করতে থাকে। পরে সাজ্জাদের পরিবারের সদস্যরা কাছের আল আমিন হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বলে। এছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া আঙুএ উদ্ধার করে নিয়ে এলে তা জোড়া লাগানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায়।

পরে বিচ্ছিন্ন সেই আঙুল উদ্ধারে সাজ্জাদের পরিবারের সদস্যরা সি-ওয়ার্ল্ডে যায়। এসময় রাজধানীতে অবস্থানরত প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এবং এমডির বরাত দিয়ে কর্তব্যরত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, সেই আঙ্গুল ফেরত দিতে নিষেধ রয়েছে। তবে সাজ্জাদের চিকিৎসার সব খরচ কনকর্ড কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এছাড়া বিষয়টি গোপন রাখার কথা বলে সাজ্জাদকে কনকর্ড গ্রুপে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন কর্মকর্তারা।

তবে অঙ্গহানির উন্নত চিকিৎসা করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে সাজ্জাদের পরিবার। ব্যয়বহুল এ চিকিৎসার খরচের জন্য একই বছরের ২৪ মার্চ সকালে কনকর্ড সি-ওয়ার্ল্ডে যায় ভুক্তভোগীর পরিবার। এসময় মামলার আসামিরা তাদের গালিগালাজ করে। এছাড়া চিকিৎসা খরচ দিবেন না বলেও জানিয়ে দেন। এছাড়া মামলা করলে প্রাণনাশের হুমকিও দেন তাঁরা।

জানা যায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ক্ষতিপূরণ দাবি করে চলতি বছরের ১৯ আগস্ট কনকর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm