দৈনিক আলোকিত চট্টগ্রাম-এর অনলাইন সংস্করণে গত ২৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ‘নিয়োগের’ দৌড়ে এগিয়ে বিএনপি-জামায়াত শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়েছেন সিভাসু’র অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আবছার খান।
ব্যাখ্যায় তিনি লিখেন— আমি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নূরুল আবছার খান ২০১৩ সাল থেকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ফিশারিজ অনুষদে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি। বিগত ১০ বছর ধরে ফিশারিজ অনুষদের ডিন হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছি। বর্তমানে আমি গ্রেড-১ ক্যাটাগরির অধ্যাপক এবং ২৫ বছরেরও বেশি সময় শিক্ষকতা ও গবেষণায় নিয়োজিত আছি। ইতিপূর্বে আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত) শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলাম।
এর আগে আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকে ১৯৯৫ সালে বিএসসি ফিশারিজে (অনার্স) প্রথম শ্রেণিতে তৃতীয়, এবং ১৯৯৬ সালে মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করি।
আমি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ২০০৭ সালে পিএইচডি এবং ২০০৯ সালে পোস্ট-ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করি। পিএইচডি ও পোস্ট-ডক্টরেট গবেষণার লক্ষ্যে আমি ২০০৪ সালের জানুয়ারি/থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাছুটি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করি। বিভিন্ন জার্নালে আমার মোট ৭৫টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪টি রয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নালে।
বাকৃবিতে অধ্যয়নকালে আমি ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বাকৃবি শাখার প্রথম সারির সক্রিয় কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ছাত্ররাজনীতির অভিভাবক ছিলেন একেএম হাফিজ আক্তার (বিপিএম-বার) অতিরিক্ত কমিশনার, ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স, ডিএমপি, ঢাকা।
বাকৃবিতে প্রভাষক পদে ১৯৯৭ সালে যোগদানের পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত আমি বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম’-এর সক্রিয় সদস্য ছিলাম। ২০০৯ ও ২০১০ সালে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের দুটি কমিটিতে কার্যকরী সদস্য নির্বাচিত হই। ওই সময়ে আমার শিক্ষক-রাজনীতির অভিভাবক ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান।
আমি ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক পদে যোগদানের পর বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী ‘প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম’ গঠন করি। ২০১৭-২০১৮ সালে গঠিত ফোরামের কার্যকরী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হই। বর্তমানে ২০২২-২০২৩ সালেও আমি নির্বাচিত কার্যকরী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়া সিভাসু শিক্ষক সমিতি’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল থেকে ২০১৬-২০১৭ সেশনে সাধারণ সম্পাদক, ২০১৫-২০১৬ সেশনে সহসভাপতি এবং ২০১৮-২০১৯ সেশনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হই।
আমি সিভাসুর ফিশারিজ অনুষদের ডিন পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সিন্ডিকেট, অর্থ কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিল, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটি, বিভাগীয় প্রধান, সিলেকশন বোর্ডের সদস্য, প্রকল্প পরিচালক এবং অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে ‘বিশেষজ্ঞ সদস্য’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি।
আমার ও সিভাসু কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়ার University of Malaysia Terengganu (UMT) এবং University Putra Malaysia (UPM)-এর সঙ্গে সিভাসু’র সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সিভাসু’র ফিশারিজ অনুষদ এবং খাদ্যবিজ্ঞান অনুষদের সব শিক্ষার্থী প্রতিবছর বিনা খরচে মালয়েশিয়ায় ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাচ্ছে।
এছাড়া জাপানের Nigata University-এর সঙ্গেও সিভাসুর সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সিভাসুর ফিশারিজ অনুষদের নির্বাচিত মেধাবী শিক্ষার্থীর্ প্রতিবছর বিনা খরচে Nigata University-তে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাচ্ছে।
আমি ঐতিহ্যগতভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাসী একটি শিক্ষা পরিবারের সন্তান। আমার বাবা-দাদা-নানা সবাই শিক্ষকতায় নিযুক্ত ছিলেন। আমার দুভাই কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছে। আমার এক মামা অ্যাডভোকেট মমতাজ আহমেদ বর্তমান সরকার আমলে দুবার কক্সবাজার জেলা পিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমার খালু শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার সৈয়দ আলমের ছেলে মরহুম আলমগীর চৌধুরী হিরু ১৯৮৫-৮৬ সালে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগেে সভাপতি ছিলেন। আমার আরেক খালু শ্বশুর আজিজুর রহমান কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহসভাপতি। কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল আমার বাল্যবন্ধু এবং সহপাঠী। আমার সহধর্মিণী ডা. খাইরুন্নেছা মুন্নী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) আজীবন সদস্য এবং বিএমএ-কক্সবাজার ইউনিটের স্বাচিপ মনোনীত প্যানেল থেকে নির্বাচিত কার্যকরী সদস্য।
আলোকিত চট্টগ্রাম

