চট্টগ্রামে চরম পর্যায়ে রয়েছে করোনা। একদিনেই কাঁধে উঠেছে ১৮ লাশ। শনাক্তও পৌঁছেছে সর্বকালের রেকর্ডে। এতকিছুর পরও বদলায়নি চট্টগ্রাম, আসেনি সচেতনতা। নানা অজুহাতে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসছে মানুষ।
করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধের চতুর্থ দিন সকাল থেকেই নগরের রাজপথ থেকে অলিগলি সবখানেই দেখা গেছে মানুষের চলাচল। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছিল ব্যক্তিগত গাড়ির দাপট।
‘জরুরি’ প্রয়োজনে ঘরের বাইরে আসা লোকজনের সংখ্যা গত তিনদিনের তুলনায় আজ মঙ্গলবার বেশি দেখা গেছে।
এর আগে সাপ্তাহিক কর্মদিবসের প্রথম দিন রোববার থেকেই সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মানুষের চলাচল বাড়তে থাকে। এদিন ব্যাংক ও শেয়ারবাজার সীমিত পরিসরে খোলা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) নগরের চকবাজার, আন্দকিল্লা, চেরাগী পাহাড়, জামালাখান, কাজির দেউড়ি, লালখানবাজার, টাইগারপাস, ওয়াসা মোড়, জিইসি মোড়, দেওয়ানহাট ও আগ্রাবাদ এলাকার রাস্তায় রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ির পাশপাশি ছিল মানুষের চলাচল।
সকাল ১১টায় আন্দরকিল্লা মোড়ে দেখা গেছে, ছাতা মাথায় শত শত মানুষ টিসিবির পণ্যের অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন সামাজিক দূরত্ব না মেনেই। অথচ তখনও আসেনি গাড়ি।
এদিকে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে নগরের মূল সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে। তারা চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি থামিয়ে বাইরে আসার কারণ জানতে চাইছেন।
এছাড়া নগরজুড়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানও অব্যাহত আছে। তারা নগরের বিভিন্ন জায়গায় ভাগ হয়ে অভিযান পরিচালনা করছেন। বিনা কারণে বাইরে বের হওয়া মানুষদের করছেন জরিমানা।
এর পাশাপাশি নগরে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তৎপর আছেন। তারাও বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে রাস্তায় বের হওয়া মানুষ ও প্রাইভেট গাড়ি থামাচ্ছেন। জানতে চাইছেন কেন তারা ঘরের বাইরে এসেছেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্টে মানুষদের কাছ থেকে ঘরের বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। যারা প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র ও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারছেন তাদেরই যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। বিনা কারণে বের হওয়াদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
এদিকে টিআই (আকবরশাহ) মো. শওকত হোসেন জানান, যানবাহনের পাশাপাশি পথচারীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। বিনা প্রয়োজনে বের হওয়া গাড়ি আটকের পাশাপাশি মামলা দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হওয়ায় সোমবার (২৬ জুলাই) ১৯৯ মামলায় ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন অপরাধে ১৯ জনকে ৪ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করেন।